বিষয়বস্তুতে চলুন

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড)/৪

উইকিসংকলন থেকে

শিরোনাম সূত্র তারিখ
সীমান্তে হামলার ব্যাপারে পাকিস্তানের প্রতি ভারতের হুঁশিয়ারী ‘দৈনিক আনন্দবাজার’ ১৬ এপ্রিল, ১৯৭১

আর যেন গোলাগুলি না পড়ে: পিণ্ডিকে দিল্লির হুঁশিয়ারী

 সীমান্তের হামলাবাজি বন্দ কর। আর যেন গোলাগুলি না পড়ে। দিল্লি পিণ্ডিকে কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে।

 সীমান্তের ওপারে যখন কামানের নলে আগুন, এপারেও তখন কথার আগুন ছুটছে। ভারতের সাফ সাফ বয়ান একটা কূটনৈতিক লড়াইয়ের সূচনা বলা যেতে পারে। আমাদের গ্রামের ওপর পাক বাহিনী গোলা নিক্ষেপ করেছিল, তারই বিরুদ্ধে এই নোট, তীব্র প্রতিবাদ। ওদিকে পিণ্ডিও ভারতীয় এলাকা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া তিনজন সিপাহীকে ফেরৎ দেবার দাবি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে।

 নয়াদিল্লী থেকে আমাদের বিশেষ সংবাদদাতা জানাচ্ছেন ত্রিপুরা পুর্ববঙ্গ সীমান্তে ভারতীয় এলাকার মধ্যে পাক সশস্ত্র বাহিনী বিনা প্ররোচনায় গুলি বর্ষণের বিরুদ্ধে ভারত অদ্য (বৃহস্পতিবার) পাক হাইকমিশনের কাছে কড়া প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছে।

 প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ত্রিপুরা সীমান্তের কাছে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সমাবেশ ঘটেছে এবং বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি করেছে।

 বহির্বিষয়ক মন্ত্রক থেকে ওই লিপিটি পাঠানো হয়। লিপিতে বলা হয়েছে: এই ধরনের আক্রমণাত্মক কাজকর্ম বন্ধের জন্য অবিলম্বে পাক সশস্ত্র বাহিনীকে যথোপযুক্ত নির্দেশ দেওয়া উচিত। পাক বাহিনী এ রকম করে গেলে যে কোন রকম পরিণাম বা পরিনতির জন্য পাক সরকারকে দায়ী করা হবে।

 আগে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে যে, দিনাজপুর অঞ্চলে মোতায়েন পাক বাহিনী ভারতীয় এলাকায় বিশেষ করে সামজিয়া গ্রামে হালকা মেসিন গান ও মাঝারি মেসিন গান থেকে গোলা বর্ষণ করেছে। তাছাড়া, ৭ এপ্রিল থেকে ত্রিপুরার বিপরীত দিকে বিবিবাজারে (কুমিল্লায়) পাক সেনাদলের সমাবেশ হচ্ছে এবং বিনা প্ররোচনায় পাক বাহিনীর গোলাবর্ষণে ভারতীয় নাগরিকরা আহত হয়েছেন।

 পিটিআই জানাচ্ছেন: পাকিস্তান বেতারে বলা হয়েছে যে, ক’দিন আগে অপহৃত ভারতীয় সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর তিনজন সিপাহীকে ফেরত দেবার জন্য ভারতের দাবিটি পাকিস্তান অগ্রাহ্য করেছে।

 ১১ এপ্রিলে ভারতের নোটে বলা হয়েছে, গত ৯ এপ্রিল ওইসব সিপাই যখন ২৪ পরগনা-যশোহর সীমান্তে কর্তব্যরত ছিলেন, ভারতীয় এলাকার মধ্য থেকে তাঁদের অপহরণ করা হয়। পাক বেতারে বলা হয়েছে, ভারতের দাবি ভিত্তিহীন। সিপাইদের পূর্ববঙ্গের এলাকায় আটক করা হয়।

পূর্ব পাকিস্তান নয়

(বিশেষ সংবাদদাতা)

 নয়াদিল্লী, ১৫ এপ্রিল-ভারত সরকারের কাছে পূর্ব পাকিস্তান বলে আর কোন কথা নেই। এর স্থান নিয়েছে ‘পূর্ববঙ্গ’।

 আজ এই প্রথম বহির্বিষয়ক মন্ত্রক পাকিস্তানী হাইকমিশনকে দেওয়া তাঁদের সরকারী নোটে সবর্ত্র ‘পূর্ববঙ্গ’ কথাটি ব্যবহার করেন। ভারতীয় এলাকার মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর গুলিবর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ওই নোট দেওয়া হয়েছে।