বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চদশ খণ্ড)/৩২

উইকিসংকলন থেকে

মোহাম্মদ শামসুল হক চৌধুরী

 ২৩শে মার্চ ভূরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কুড়িগ্রাম মহকুমা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ, আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী, পুলিশ, আনসার মুজাহিদ, সাবেক ই,পি,আর, আওয়ামী লীগ কর্মী, নেতা এবং সর্বস্তরের জনগণের এক বিরাট সমাবেশে আমি সভাপতিত্ব করি। এই সমাবেশে ইয়াহিয়ার ঘৃণ্য চক্রান্ত নস্যাৎ করে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে পাকিস্তানী সৈন্যদের কবল থেকে মাতৃভূমিকে মুক্ত করার জন্য শপথ গ্রহণ করা হয়। ঐ সমাবেশেই স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। ভূরুঙ্গামারীর ইতিহাসে এটিই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন।

 ২৫শে মার্চের কালো রাত্রিতে বাংলাদেশে ব্যাপক গণহত্যা শুরু হলে ২৬ শে মার্চ আমরা জরুরী ভিত্তিতে স্থানীয় নেতাদের নিয়ে এক গোপন বৈঠকে থানা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করি এবং সমস্ত ইউনিয়নে সংগ্রাম পরিষদ গঠন করার জন্য জরুরী নির্দেশ প্রদান করি। বঙ্গবন্ধুর ৮ই মার্চের ভাষণ মোতাবেক সর্বস্তরের জনগণকে সংঘবদ্ধ করার জন্যও আমরা কর্মসূচী গ্রহণ করি।

 ইতিমধ্যে ভূরঙ্গামারী থানার সীমান্তবর্তী ফাঁড়িগুলোর সাবেক অবাঙ্গালী ইপিআর-রা সাবেক বাঙ্গালী ইপিআর-দের ওপর আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়। ইপিআর আনিস মোল্লা এবং রওশনুল বারীর নেতৃত্বে ইপিআরের সদস্যবৃন্দ আমাদের সহযোগিতা কামনা করলে স্থানীয় কর্মী ও নেতৃবৃন্দসহ আমার ভূরঙ্গামারীর বাসস্থানে এক জরুরী বৈঠকে অবাঙ্গালী ইপিআরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে বাঙ্গালী ইপিআরদের সক্রিয় সাহায্যের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।

 ২৮শে মার্চ অবাঙ্গালী ইপিআরদের বিরুদ্ধে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরদির ২৯শে মার্চ বাঙ্গালী ইপিআর এবং সম্মিলিত ছাত্র জনতার সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংঘর্ষে জয়মনির হাট ক্যাম্পের একজন অবাঙ্গালী সুবেদার, একজন ড্রাইভার এবং একজন অয়ারলেস অপারেটর নিহত হয়। উক্ত জয়মনিরহাট ক্যাম্পে অবাঙ্গালী ইপিআরদের সঙ্গে সহযোগিতাকারী জয়মনিরহাটের একজন অবাঙ্গালী চক্ষু চিকিৎসক জনগণের হাতে নিহত হয়।

 অত্র থানার অন্যান্য সীমান্ত ফাঁড়ি যেমন- কেদার, সোনাহাট, ধলডাঙ্গা প্রভৃতি স্থানে বাঙ্গালী ইপিআরদের সঙ্গে সংঘর্ষে কয়েকজন অবাঙ্গালী নিহত হয়। অবাঙ্গালী ইপিআরদের কবল থেকে জয়মনির হাট ক্যাম্প উদ্ধার করার সঙ্গে সমস্ত অস্ত্রাদি আওয়ামী লীগের তত্ত্বাবধানে রাখা হয় এবং নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী থানার সমস্ত বাঙ্গালী ইপিআরগণকে তাদের অস্ত্রসমেত উক্ত ক্যাম্পে জরুরী ভিত্তিতে সংঘবদ্ধ করা হয়।

 অতঃপর সাবেক বাঙ্গালী ইপিআরগণের সঙ্গে আনসার, মুজাহিদ, এবং আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী জয়মমনিরহাটে যোগ দেয়। ছাত্র ও যুবসম্প্রদায়ও এখানে যোগ দেয়। এদের সকলকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিয়ে আমরা হানাদার বাহিনী প্রতিরোধের ব্যবস্থা করি।

 জয়মনিরহাটে সংঘবদ্ধ এই দলকে বিভিন্ন ক্যাম্পে এবং পুলিশ ফাঁড়ি থেকে প্রাপ্ত সামান্য অস্ত্র দিয়েই রংপুর সামরিক গ্যারিসন থেকে হানাদার বাহিনী যাতে অত্র অঞ্চলে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য তিস্তাপুল প্রতিরোধ কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এই সংঘবদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাদের খাওয়াসহ যাতীয় আর্থিক দায়িত্ব আমি স্থানীয় কর্মী ও নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় পালন করেছি। অতঃপর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র যোগান দেয়াই ছিল বড় সমস্যা। ২৯শে মার্চ আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের আসাম ও পশ্চিম বঙ্গ সীমান্তে সোনাহাট এবং সাহেবগঞ্জ সীমান্ত ঘাঁটির সেনাধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। আমাদের অনুরোধে উক্ত সেনাধ্যক্ষ প্রাথমিক বেসরকারী সাহায্য হিসেবে ১লা এপ্রিল মধ্যরাতে ২টি হাল্কা মেশিনগান, কিছুসংখ্যক রাইফেল এবং প্রচুর হাতবোমা প্রদান করেন। এসব অস্ত্র ও তিস্তা প্রতিরোধ কেন্দ্রে প্রতিরোধ কেন্দ্রে সরাসরি পাঠানো হয়। পরবর্তীকালে আমি সোনাহাট এবং সাহেবগঞ্জের ভারতীয় সীমান্ত ঘাঁটি থেকে সামরিক সাহায্য নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পাঠিয়েছি।

 ৫ই এপ্রিল ভূরুঙ্গামারী কলেজে আমরা প্রথম মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলি। যুবক এবং ছাত্ররা এখানে প্রশিক্ষণ নিতে থাকে। শীঘ্রই বাংলাদেশের অধিকৃত অঞ্চল থেকে বহু ছাত্র-যুবক এখানে আসতে থাকলে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি সম্প্রসারণ করা হয়। সমগ্র রংপুর জেলার বিভিন্ন সীমান্ত ফাঁড়ি থেকে বাঙ্গালী ইপিআরবৃন্দকে আমরা ভূরঙ্গামারী থানায় সংঘবদ্ধ করতে সমর্থ হই। বিভিন্ন সীমান্ত ফাঁড়ি থেকে আগত ইপিআরদের দুই কোম্পানী ইপিআরকে তিস্তা প্রতিরোধ কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেই। এক কোম্পানী ইপিআরকে ভূরঙ্গামারীতে সংরক্ষিত রাখা হয়। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম ও প্রধান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র হিসেবে ভূরুঙ্গামারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হানাদার কবলিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অসংখ্য গেরিলা যোদ্ধা তৈরি করেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রাথমিক ট্রেনিং দিয়েই গেরিলাদেরকে সরাসরি প্রতিরোধ ঘাঁটিতে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীকালে এখান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে পাঠানো হয়েছে। সংগ্রাম পরিষদের মাধ্যমে অত্র থানার বিভিন্ন ইউনিয়নের জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদেরকে আর্থিক সাহায্য করেছেন। এছাড়া ভারতীয় জনগণ ভুরঙ্গামারী থানার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে চাল, গম, আলু, কেরোসিন, পেট্রোল, সিগারেট, বিস্কুট, ঔষধপত্র প্রভৃতি সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করেছেন।

 ৮ ই এপ্রিল ভারতে আশ্রিত আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের এক জরুরী গোপন নির্দেশ আমি পাই। উক্ত নির্দেশে উত্তরাঞ্চলের সাবেক গণপরিষদ সদস্যবৃন্দকে অবিলম্বে ভারতের এক অজ্ঞাত স্থানে সম্মিলিত হয়ে স্থানীয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়। সে মোতাবেক ৯ই এপ্রিল আমি অত্র অঞ্চলের অপরাপর গণপরিষদ সদস্যদের নিয়ে ভারতের আসাম প্রদেশের গোয়ালপাড়া জেলার সোনাহাট সীমান্ত ঘাঁটিতে উপস্থিত হই। অতঃপর সামরিক কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আমাদেরকে আসাম প্রদেশের গোয়ালপাড়া জেলার রূপসা বিমান বন্দরে নিয়ে আসা হয়। এখানেই আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ বহু নেতার সাথে আমরা প্রথম মিলিত হই। কিছুক্ষণের মধ্যে তাজউদ্দিন আহমদ, কুষ্টিয়ার ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলাম, শেখ ফজলুল হক মনি, ভারতের ইস্টার্ণ কমাণ্ডের প্রধান জগজিৎ সিং অরোরা, আসাম ৮২তম সীমান্তরক্ষী ব্যাটালিয়নের সেনাধ্যক্ষ, কর্নেল আর দাস, রূপসা বিমান বন্দরে অবতরণ করেন এবং আমাদের সঙ্গে জরুরী বৈঠকে মিলিত হন। এই বৈঠকে উত্তরাঞ্চলের ভারতীয় সামরিক সাহায্য, মুক্তিবাহিনীর তত্ত্বাবধান ও তাদের সার্বিক দায়িত্ব আমার ওপর অর্পণ করা হয়। এই সময় জনাব মিজানুর রহমান চৌধুরী, জনাব মতিউর রহমানসহ সাবেক বাংলাদেশ বাহিনী প্রধান ওসমানী মুক্তাঞ্চল সফর করে আমাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। এভাবে ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় জনগণের সাহায্য সহযোগিতা এবং ভারতীয় জনগণ ও সামরিক কর্তৃপক্ষের সাহায্যে আমরা ২৬শে যে পর্যন্ত কুড়িগ্রাম শহরের উত্তরে ধরলা নদীর উত্তর তীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা অটল রাখতে সক্ষম হই। ২৬শে মে রাতে পাক বাহিনীর ভারী অস্ত্রের মুখে আমাদের পাটেশ্বরী প্রতিরোধ ঘাঁটি ভেঙ্গে গেলে আমরা ভারতে আশ্রয় গ্রহন করি।

 ভারতে প্রবেশের পরপরই মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘবদ্ধ করা হয়। ভারতের পশ্চিম বাংলা সীমান্তের সাহেবগঞ্জ ও আসামের সোনাহাটে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর অনুমোদনে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা ঘাঁটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এখান থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা অধিকৃত ভূরুঙ্গামারী এবং নাগেশ্বরী থানার বিভিন্ন স্থানে হানাদারদের প্রতি আঘাত হানতে থাকে। বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মোতাবেক অধিকৃত অঞ্চল থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রহ করার জন্য পশ্চিম বাংলা সীমান্তে যুবশিবির খোলার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। প্রাথকি অবস্থায় এই যুবশিবিরগুলো স্থানীয় ভারতীয় জনগণের আর্থিক সাহায্যপুষ্ট ছিল। পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকার যুবশিবিরগুলো আর্থিক দায়িত্ব গ্রহণ করে। যুবশিবিরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাথমিক ট্রেনিং-এর পর তাদের উচ্চতর ট্রেনিং-এর জন্য ভারতের অভ্যন্তরে পাঠানো হত।

 দুধকুমার নদীর পূর্বতীরস্থ নাগেশ্বরী এবং ভুরঙ্গামারী থানার এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল হানাদারকবল মুক্ত ছিল। এই সমস্ত অঞ্চলের জনগণের সাহায্যের জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়েছি। মুক্তাঞ্চলের জনগণের নিরাপত্তার জন্য নাগেশ্বরী থানার সুবলপাড় বন্দরে এবং মাদারগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের ছোট ছোট ঘাঁটি স্থাপন করা হয়েছিল। পশ্চিম বাংলার কুচবিহার জেলা শহর উত্তরাঞ্চলের সাবেক গণপরিষদ সদস্যবৃন্দের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সরকারের Northern Zone অফিস হবার পরপরই মুক্তাঞ্চলে চিকিৎসা ও ঔষধপত্রের তীব্র অভাব জরুরী ভিত্তিতে মিটানো হয়। মুক্তাঞ্চলের সোনাহাটে প্রধান মেডিকেল কেন্দ্র স্থাপন করে সেখান থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে উক্ত মেডিকেল কেন্দ্র খোলা হয়। বাংলাদেশ সরকারের কুচবিহারস্থ Northern Zone Medical Centre থেকে মুক্তাঞ্চলে ঔষধপত্র সরবরাহ করার ব্যবস্থা আমরা করেছি। আসাম প্রদেশে ৮২তম ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারে যোগাযোগ করে সেখান থেকে ঔষধপত্র লাভ করেছি এবং উক্ত অঞ্চলের জনগণকে বিনামূল্যে বিতরণ করেছি। মুক্তাঞ্চলে খাদ্য সংকট দেখা দিলে আমি তা অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারকে অবহিত করি এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে Dorthern Zone-এর সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক গণপরিষদ সদস্য জনাব মতিয়র রহমানকে মুক্তাঞ্চল পরিদর্শন করতে আহ্বান জানাই। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তিনি '৭১ সালের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সোনাহাটে এক বিরাট গণসমাবেশে ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন। স্থানীয় কর্মীদের সহায়তায় উক্ত টাকা বিতরণ করা হয়। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্য, বাংলাদেশ সরকারের Northern Zonc-এর প্রচার বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব আমার ওপর অর্পণ করা হয়েছিল। মুক্তাঞ্চালের জাতীয় ঐক্য অক্ষুন্ন রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা আমরা সাধ্যমত চালিয়েছিলাম।

 বাংলাদেশের সাবেক ই,পি,আর বাহিনীর ক্যাপ্টেন নওয়াজেদ-এর অধীনস্থ সাহেবগঞ্জ ঘাঁটির গেরিলা যোদ্ধা এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আসাম সীমান্তের সোনাহাট ঘাঁটির গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সৈন্যদের এক যৌথ অভিযানের পর ১৭ই নভেম্বর ভূরঙ্গামারী মুক্ত হয়। এর পরই অত্র থানার আন্ধারীঝাড় বাজার থেকে পাক বাহিনী তাদের গোলন্দাজ বাহিনী সরিয়ে পিছু হটে গেলে ভূরুঙ্গামারী থানা শত্রুমুক্ত হয়। এই এলাকা মুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতে আশ্রিত জনগণ বিধ্বস্ত ভূরঙ্গামারীতে দলে দলে প্রবেশ করতে থাকে। মাতৃভূমিতে পা দিয়েই জনগণের আনন্দ-উল্লাস আমাদেরকে অভিভূত করে। ডিসেম্বরে সারা বাংলাদেশের মুক্তির সাথে সাথে জনগণ এক অভূতপূর্ব আনন্দে উল্লসিত হয়েছে। দীর্ঘ পঁচিশ বছরের স্বাধিকার আন্দোলন থেকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়কে জনগণ বাঙ্গালী জাতির এক ঐতিহাসিক বিজয় বলে মনে করেছে।

শামসুল হক চৌধুরী
গণপরিষদ সদস্য, (সাবেক এম,পি,এ)
রংপুর-১২
১৭মে, ১৯৭৩।