বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চদশ খণ্ড)/৬

উইকিসংকলন থেকে

আব্দুল বাছিদ সিদ্দিকী[১]

 ২৬শে মার্চ আমরা টাঙ্গাইল সংগ্রাম পরিষদ গঠন করি। পুলিশ এবং আনসারের সহযোগিতায় কিছু অস্ত্র সংগ্রহ করি এবং টাঙ্গাইলে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি। তারপর টাঙ্গাইল, কালিহাতী, নাটিয়াপাড়াতে অগ্রবর্তী ঘাঁটি স্থাপন করি। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে আমি ও হুমায়ূন খালিদ কালিহাতীতে অবস্থান করি। সেখানে থেকে আমরা নাটিয়াড়া আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ পাই। ই,পি,আর, বি,ডি আর বাহিনী মধুপুরে ঘাঁটি স্থাপন করতে চলে যায়। ঘাটাইল থেকে আমরা ময়মনসিংহ যাই। এখানে সিটি স্কুলে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প ছিল এবং রফিকউদ্দিন ভূঁইয়া সাহেবের বাসায় ছিল মুক্তিবাহিনীর অফিস। সেখান থেকে ঘাটাইল পাহাড়ী অঞ্চলের ধলাপাড়া গ্রামে চলে যাই। এখান থেকে মধুপুর পতনের সংবাদ জানতে পারি। ধলাপাড়া হাসপাতালে আমরা রিলিফ ক্যাম্প স্থাপন করি। কাদের সিদ্দিকীর সহযোগিতায় সর্বপ্রথম মুক্তিবাহিনী গঠন করি। সখীপুরে মুক্তিবাহিনীর কেন্দ্র স্থাপন করি। চারান, বাসাইল, কাউলাজানি, কাসুটিয়া, বল্লা, দেওপাড়া, ভূঞাপুর, গোপালপুর, বৈলারপুর প্রভৃতি স্থানে আমরা পাক-বাহিনীর মোকাবেলা করি।

 অতঃপর আমি, নূরুন্নবী ও নূরুল হক প্রমুখ ভারতে অস্ত্র সংগ্রহের জন্যে গমন করি। মেঘালয় থেকে বেশ কিছুসংখ্যক অস্ত্র সংগ্রহ করে আমরা আবার ফিরে আসি। ইতিমধ্যে আমরা টাঙ্গাইলে মুক্তিবাহিনীর বেসামরিক প্রশাসন চালু করি। এর প্রধান কেন্দ্র ছিল সখীপুর। আমি ছিলাম বিচার বিভাগের প্রধান। কাদের সিদ্দিকী ছিলেন সর্বাধিনায়ক। এই সময় ধলাপাড়ায় যে যুদ্ধ হয় তাতে কাদের সিদ্দিকী আহত হন।

 লাউহাটি, নাগরপুর, বাঐখোলা, দেওপাড়া, ধলাপাড়া, মাকরাই প্রভৃতি স্থানে পাক-বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালিয়ে আমরা পাক-বাহিনীর বিপুল ক্ষতি সাধন করি। এ সময় টাঙ্গাইল মূল শহরে, আশেপাশের কতগুলো এলাকা ছাড়া, মুক্তিবাহিনীর বেসামরিক প্রশাসন চালু করি। ১১ই ডিসেম্বর টাঙ্গাইল মূল শহর দখলদার মুক্ত হয়।

সাক্ষর/

আব্দুল বাছিদ সিদ্দিকী

২৫-৭-৭৩


  1. পি ই-১৩২ টাঙ্গাইল-৩