যাঁদের দেখেছি/পনেরো

উইকিসংকলন থেকে

পনেরো

 রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক কবিদের মধ্যে তিনজনের নাম সমধিক উল্লেখযোগ্য: দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, অক্ষয়কুমার বড়ালদেবেন্দ্রনাথ সেন

 কিন্তু দ্বিজেন্দ্রলাল বেশী ঝোঁক দিয়েছিলেন হাসির গান, জাতীয় সঙ্গীত ও নাটকের উপরে। তাঁর খ্যাতির ভিত্তিও ঐ তিন বিভাগেই। “মন্দ্র” ও “আলেখ্যে”র কবি রূপে তাঁকে চেনে কম লোকই।

 অক্ষয়কুমার ও দেবেন্দ্রনাথ নিছক গীতি-কাব্যকার। একাধিক সাহিত্য বৈঠকে তখন প্রায়ই প্রশ্ন উঠত, ওঁদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতর কবি কে? বরাবরই আমি সংশয়শূন্য চিত্তে উত্তর দিয়েছি, দেবেন্দ্রনাথ। এ বিষয়ে আজও আমি নিঃসন্দেহ। কারণ বলি।

 যথাসময়েই বলা হয়েছে, অক্ষয়কুমারের রচনার উপরে বিহারীলালের অল্পবিস্তর প্রভাব শেষ পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল। কিন্তু রবীন্দ্রযুগেও দ্বিজেন্দ্রলাল ও দেবেন্দ্রনাথ যতটা নিজস্ব ষ্টাইলের পরিচয় দিয়েছেন, আর কোন কবিই ততটা পারেন নি। বোধ হয় দ্বিজেন্দ্রলালের চেয়েও দেবেন্দ্রনাথ এদিকে অধিকতর অগ্রসর। রবীন্দ্রনাথের প্রশংসা তাঁর মুখে সর্বদাই উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠত, অথচ তাঁর রচনার কোথাও নেই রবীন্দ্রনাথের তিলমাত্র প্রভাব। স্বাক্ষর না থাকলেও দেবেন্দ্রনাথের যে কোন কবিতাকেই চিনতে পারা যায়।

 দেবেন্দ্রনাথের ছন্দবৈচিত্র্য ছিল যথেষ্ট, এদিক দিয়ে অক্ষয়কুমার অপেক্ষাকৃত দরিদ্র। দেবেন্দ্রনাথের অনেক কবিতায় দার্শনিকতা আছে বটে, কিন্তু সুমধুর কাব্যরসের মধ্যে তার পৃথক অস্তিত্ব ধরা পড়ে না। অক্ষয়কুমারের দার্শনিকতা প্রায়ই কাব্যরসকে চাপা দেবার চেষ্টা করে। দেবেন্দ্রনাথের কবিতা সুযোগ পেলেই হাস্যময়ী হ’তে চায়, কিন্তু অক্ষয়কুমারের কবিতার মুখ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গুরুগম্ভীর। বিষয়বৈচিত্র্যেও দেবেন্দ্রনাথ শ্রেষ্ঠ, যদিও মিলের দিক দিয়ে তিনি অক্ষয়কুমারের চেয়ে দুর্বল।

 অক্ষয়কুমারের কবিতা অধিকতর মার্জিত ও সুশৃঙ্খল বটে, কিন্তু দেবেন্দ্রনাথের মত তা স্বতঃস্ফূর্ত ব’লে মনে হয় না, এখানে ওখানে চেষ্টার লক্ষণও আছে। সব চেয়ে অবাক হ’তে হয় দেবেন্দ্রনাথের ভূরি ভূরি উপমার বাহার দেখে। রবীন্দ্রনাথ উপমার রাজা, কিন্তু উপমায় এত নূতনত্ব তিনিও দেখাতে পারেন নি। কেবল তিনি কেন, আর কোন বাঙালী কবিও নন। অন্য কোন কবির হাতে পড়লে যে সব উপমা একেবারে উদ্ভট ও উপহাস্য হয়ে উঠত, তাদের নিয়েই দেবেন্দ্রনাথ নিজের কাব্যের আসর এমন জমিয়ে তুলেছেন যে, দেখলে বিস্ময়ের সীমা থাকে না। তার উপরে ছোট ছোট আটপৌরে সাদাসিধে শব্দের সাহায্যে হাসিখুসির ভিতর দিয়ে তিনি যে সব ঘরোয়া ছবি এঁকে গিয়েছেন, বাংলা সাহিত্যে তার তুলনাই নেই। সময়ে সময়ে তাঁর হাসির ভিতরেও থাকে জমাট অশ্রু। আর এক বিষয়ে অক্ষয়কুমারের সঙ্গে তাঁর পার্থক্য দেখা যায়। অক্ষয়কুমারকে দুঃখের কবি বললে অন্যায় হবে না; কিন্তু দেবেন্দ্রনাথ ছিলেন আনন্দের কবি, হাসির কবি, আলোর কবি।

 দেবেন্দ্রনাথ এলাহাবাদে ওকালতি করতেন এবং মক্কেল-মহলে তাঁর পসার ছিল যথেষ্ট। আইনের সঙ্গে কবিতার যোগসূত্র কোথায় আছে জানি না, কিন্তু বাংলাদেশে গত যুগের অধিকাংশ শ্রেষ্ঠ কবির সঙ্গেই কোন না কোন দিক দিয়ে আইনের সম্পর্ক ছিল ঘনিষ্ঠ। যেমন মাইকেল মধুসূদন, বঙ্কিমচন্দ্র, হেমচন্দ্র, নবীনচন্দ্র, দ্বিজেন্দ্রলাল ও রজনীকান্ত সেন প্রভৃতি। দেবেন্দ্রনাথ যখন মকদ্দমার নথিপত্র ঘাঁটতেন না, তখন করতেন কবিতা রচনা। “অশোকগুচ্ছ”, “গোলাপগুচ্ছ”, “শেফালীগুচ্ছ” ও “পারিজাতগুচ্ছ” প্রভৃতি কয়েকখানি কাব্যপুস্তক সেই সাধনার ফল। “অশোকগুচ্ছ” পাঠ করলেই দেবেন্দ্রনাথের কবিত্বের সমস্ত বিশেষত্বের সঙ্গে সম্যকরূপে পরিচিত হওয়া যায়। গদ্যেও তাঁর হাত ছিল যে সুদক্ষ, সে প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে মাঝে মাঝে। কিন্তু গদ্য নিয়ে তিনি বেশী নাড়াচাড়া করেন নি। অজস্র কবিতা লিখেছেন। তার মধ্যে ফরমাজী ও বাজে কবিতার সংখ্যাও অল্প নয় বটে, কিন্তু প্রত্যেকটির মধ্যে আছে পরম উপভোগ্য আন্তরিকতা ও বিশুদ্ধ কবি-চিত্তের আত্মপ্রকাশ। শেষের দিকে তাঁর কবিতার মধ্যে ধর্মভাবই প্রধান হয়ে উঠেছিল।

 বলরাম দে (এখন ডব্লিউ. সি. ব্যানার্জি) স্ট্রীটের উপরে দেবেন্দ্রনাথ একটি বিখ্যাত বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন, তার নাম “শ্রীকৃষ্ণ পাঠশালা”। তিনি কলকাতায় এসে সেইখানে বাস করছেন শুনে একদিন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলুম। সে বোধ হয় চল্লিশ কি একচল্লিশ বৎসর আগেকার কথা।

 গিয়ে কি দৃশ্য দেখলুম! তিনতলার ছোট্ট একটি ঘরের ভিতরে ছোট্ট একখানি চৌকীর উপরে শুয়ে আছেন বৃদ্ধ কবি—হাতে বাত, পায়ে বাত, সর্বাঙ্গে বাত, প্রায় পক্ষাঘাতের রোগীর মত পঙ্গু! চোখে বিষম পুরু কাঁচের চশমা, দৃষ্টিশক্তি প্রায় অন্ধের মত ক্ষীণ, ভীষণ রোগযন্ত্রণা; কিন্তু প্রসন্ন মুখে তার কোন চিহ্ণ নেই, কোন অভিযোগ নেই— নির্বিকারভাবে মুখে মুখেই রচনা ক’রে যাচ্ছেন শ্লোকের পর শ্লোক এবং কাগজ-কলম নিয়ে ব’সে আর একজন তা লিখে নিচ্ছেন। সারা মন আমার বিস্ময় ও শ্রদ্ধায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠল। এমন অবস্থায় যে রচনাকার্য—বিশেষতঃ কাব্যরচনা চলতে পারে, সে ধারণা আমার ছিল না।

 তাঁর সঙ্গে আলাপ হবার পর থেকে সেই ঘরখানি আমার কাছে হয়ে উঠল তীর্থক্ষেত্রের মত। দিনের পর দিন প্রায় প্রতিদিনই তাঁর কাছে গিয়ে আশ্রয় নিতুম এবং সর্বান্তঃকরণ দিয়ে উপভোগ করতুম দারুণ রোগযন্ত্রণায় পরম অবিচল সেই সাধক কবির কাব্যগুঞ্জন ও সাহিত্যের বাণী। তাঁর মনের উপরে দেহের কোন প্রভাবই ছিল না।

 মৃত্যুশয্যাশায়ী রজনীকান্তের অসাধারণ ও অনাহত কাব্যসাধনা দেখে বিস্মিত হয়ে রবীন্দ্রনাথ পত্রে তাঁকে যে কথাগুলি লিখেছিলেন, এখানে তা স্মরণ হচ্ছে: ‘সেদিন আপনার রোগশয্যার পার্শ্বে বসিয়া মানবাত্মার একটি জ্যোতির্ময় প্রকাশ দেখিয়া আসিয়াছি। শরীর তাহাকে আপনার সমস্ত অস্থি-মাংস, স্নায়ুপেশী দিয়া চারিদিকে বেষ্টন করিয়া ধরিয়াও কোনোমতে বন্দী করিতে পারিতেছে না, ইহাই আমি প্রত্যক্ষ দেখিতে পাইলাম।... কাঠ যতই পুড়িতেছে, অগ্নি আরো তত বেশী করিয়াই জ্বলিতেছে। আত্মার এই মুক্ত-স্বরূপ দেখিবার সুযোগ কি সহজে ঘটে? মানুষের আত্মার সত্য-প্রতিষ্ঠা যে কোথায়, তাহা যে অস্থি-মাংস ও ক্ষুধাতৃষ্ণার মধ্যে নহে, তাহা সেদিন সুস্পষ্ট উপলব্ধি করিয়া আমি ধন্য হইয়াছি। সছিদ্র বাঁশীর ভিতর হইতে পরিপূর্ণ সঙ্গীতের আবির্ভাব যেরূপ, আপনার রোগক্ষত, বেদনাপূর্ণ শরীরের অন্তরাল হইতে অপরাজিত আনন্দের প্রকাশও সেইরূপ আশ্চর্য!’

 তেতলার ছাদের সেই কুঠরির মধ্যে কবির সঙ্গে দেখা করতে আসতেন প্রত্যহই বহু সাহিত্য-সেবক। আমার মত নিয়মিতভাবে আসতেন সুধীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর আসতেন শ্রীমোহিতলাল মজুমদার— কাব্যচর্চা শুরু করলেও তখনও তিনি কবি রূপে বিখ্যাত হন নি। আর একজনও প্রতি বৈকালে হাজিরা দিতেন, তিনি শ্রীকৃষ্ণ পাঠশালার প্রধান শিক্ষক (এবং পরে ভারতী বিদ্যাভবনের প্রতিষ্ঠাতা) স্বর্গীয় ভবতারণ সরকার। একদিন রবীন্দ্রনাথও এসেছিলেন, কিন্তু আমি সেদিন উপস্থিত ছিলুম না ব’লে দুই কবির সম্ভাষণ শোনবার সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছিলুম। দেবেন্দ্রনাথের উপরে রবীন্দ্রনাথের শ্রদ্ধা ছিল অত্যন্ত, তাই তিনি নিজের বিখ্যাত কবিতাপুস্তক “সোনার তরী” তাঁর নামেই উৎসর্গ করেছিলেন। দেবেন্দ্রনাথ বয়সে রবীন্দ্রনাথের চেয়ে প্রায় পাঁচ বৎসর ও অক্ষয়কুমারের চেয়ে প্রায় দশ বৎসর বড় ছিলেন।

 প্রায় প্রতিদিনই আসতেন বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকরা। সাক্ষাৎ বা আলাপ করতে নয়, কবিতা ভিক্ষা করতে। এমনি ছিল দেবেন্দ্রনাথেব দাক্ষিণ্য, কারুকেই ফিরতে হ’ত না শূন্যহস্তে। ব্যাধির তাড়না, শয্যা থেকে উঠতে বা নিজে কলম ধরতে পারেন না, তবু কোনদিন তিনি কোন সম্পাদককেই হতাশ করেন নি, নগণ্য পত্রিকার জন্যেও মুখে মুখে কবিতা রচনা ক’রে দিয়েছেন। তাগিদ মেটাবার জন্যে এই শ্রেণীর রচনা যে বিশেষভাবে উৎরে যেত না সে কথা বলাই বাহুল্য।

 দেবেন্দ্রনাথের আর একটি মহৎ গুণ, তাঁর মনে ছিল না ঈর্ষার নামমাত্র। কতদিন তাঁর কাছে গিয়েছি এবং কোনদিনই তিনচার ঘণ্টার আগে তাঁর কাছ ছেড়ে নড়ি নি, কিন্তু কখনো তাঁকে ঘূণাক্ষরেও অন্য কোন কবিদের নিন্দা করতে শুনি নি। তিনি কুৎসা করতেনও না, কুৎসা শুনতেনও না। সর্বদাই প্রশান্ত ও প্রসন্ন মনে বিরাজ করতেন নিজের কাব্য-তপোবনে। তাঁর বৈঠক ছিল যথার্থ সাহিত্যের বৈঠক। সেখানে ভাবের আদানপ্রদান চলত তর্কাতর্কির উত্তাপের ভিতর দিয়ে নয়, সখ্য, সদ্ভাব ও সম্প্রীতির ভিতর দিয়ে। এমন বৈঠক আজকাল তো আর দেখি না।

 ছেলেবেলা থেকেই মাঝে মাঝে কবিতা রচনার চেষ্টা করেছি, তখনও করতুম। একদিন দেবেন্দ্রনাথকে একলা পেয়ে ভয়ে ভয়ে ভাঁকে আমার একটি কবিতা শুনিয়ে দিলুম। দেবেন্দ্রনাথ উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে ব’লে উঠলেন, ‘চমৎকার, চমৎকার! Beautiful! হেমেন্দ্রবাবু, আপনি যে একটি বর্ণচোরা আম! আপনি যে একজন ভালো কবি, সেটা তো আমার জানা ছিল না! আপনার আরো কবিতা আছে? আমার কাছে নিয়ে আসবেন— অসঙ্কোচে!’

 ভেঙে গেল আমার লজ্জার বাঁধ। তারপর থেকে দেবেন্দ্রনাথকে একলা পেলেই আমি কবিতা নিয়ে করতুম আক্রমণ। তিনি যত শুনতেন, তাঁর শুনবার ইচ্ছা তত যেন বেড়ে উঠত। সাগ্রহে বলতেন, ‘আরো কবিতা আছে? আমাকে শোনাবেন। আপনার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল!’

 ভবিষ্যৎ যে কতখানি উজ্জ্বল এতদিনে তা আন্দাজ করতে পেরেছি। কিন্তু তখন তা পারি নি ব’লে দ্বিগুণ উৎসাহে কোমর বেঁধে কবিতা রচনায় নিযুক্ত হলুম। রোজই একটি দু’টি ক’রে কবিতা লিখে দেবেন্দ্রনাথকে শুনিয়ে আসি। ঊর্বশী ও পুরুরবার কাহিনী নিয়ে একখানি খণ্ডকাব্যও রচনা ক’রে ফেললুম। দেবেন্দ্রনাথ মন দিয়ে সব শুনতেন, আমাকে আরও লেখবার জন্যে উৎসাহ দিতেন এবং অন্য কারুকে কারুকে ডেকে বলতেন, ‘হেমেন্দ্রবাবু সুন্দর কবিতা লেখেন, জানেন কি?’ কেবল তাই নয়, আমার কোন কোন কবিতার দুই-একটি লাইন মুখে মুখে তিনি পুনরাবৃত্তি করতেও পারতেন। দেবেন্দ্রনাথের কাছ থেকে প্রেরণা লাভ ক’রে মনের ঝোঁকে লিখে ফেলেছিলুম প্রায় দেড়শত কবিতা। তার মধ্যে কয়েকটি মাত্র কবিতা “নব্যভারত” ও “অর্চনা” প্রভৃতি মাসিক কাগজে প্রকাশিত হয়েছিল, বাকি কবিতাগুলি বন্ধ ক’রে রেখেছিলুম দেরাজের ভিতরে। কিছুদিন পরে নিজেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলুম, সেগুলি প্রকাশযোগ্য বা উল্লেখযোগ্য নয়।

 কিন্তু সেই সত্য কি দেবেন্দ্রনাথ বুঝতে পারেন নি? নিশ্চয়ই পেরেছিলেন। তিনি পাকা কবি, জ্ঞানী এবং গুণী। আমার সে কবিতাগুলির অসারতা সম্বন্ধে তাঁর কোন সন্দেহই ছিল না। তবু তিনি আমাকে নিরুৎসাহ করতে চান নি। কারণ তিনি জানতেন বীজে জলসঞ্চার না করলে বীজ পরিণত হয় না চারায়। নূতন লেখকের মনে প্রেরণা সঞ্চার না ক’রে বিরুদ্ধ সমালোচনা করলে ভবিষ্যতে তার সফলতা সম্বন্ধে সংশয় থেকে যায়। নতুন লেখকরা মানুষ হ’তে পারে দেবেন্দ্রনাথেরই মত দরদী শিক্ষকের কাছে।

 কবিতাগুলিরও পরিণাম শুনুন। মমতাবশতঃ নিজের হাতের কাজকে সেদিন পর্যন্ত নষ্ট করতে পারি নি। আমি পারি নি, কিন্তু আমার কনিষ্ঠ পুত্র পেরেছে। কবিতা-লেখা কাগজগুলো ইন্ধনের মত ব্যবহার ক’রে ফেলে দিয়েছে উনুনের ভিতরে। কিন্তু সে তো জানে না, দেবেন্দ্রনাথ তাদের ভিতরেই দেখতে পেয়েছিলেন আমার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎকে! তবে আমার ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল করতে না পারলেও তারা যে অবশেষে উনুনের ভিতরটা উজ্জ্বল করতে পারলে, এইটুকুই যা সান্ত্বনা।