রূপসী বাংলা/৫
অবয়ব
(পৃ. ১৫)
আকাশে সাতটি তারা যখন উঠেছে ফুটে আমি এই ঘাসে
ব’সে থাকি; কামরাঙা-লাল মেঘ যেন মৃত মনিয়ার মতো
গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে গেছে—আসিয়াছে শান্ত অনুগত
বাংলার নীল সন্ধ্যা—কেশবতী কন্যা যেন এসেছে আকাশে:
আমার চোখের ’পরে আমার মুখের ’পরে চুল তার ভাসে;
পৃথিবীর কোনো পথ এ কন্যারে দেখে নিকো—দেখি নাই অত
অজস্র চুলের চুমা হিজলে কাঁঠালে জামে ঝরে অবিরত,
জানি নাই এত স্নিগ্ধ গন্ধ ঝরে রূপসীর চুলের বিন্যাসে
পৃথিবীর কোনো পথে:নরম ধানের গন্ধ—কল্মীর ঘ্রাণ,
হাঁসের পালক, শর, পুকুরের জল, চাঁদা সরপুঁটিদের
মৃদু ঘ্রাণ, কিশোরীর চাল-ধোয়া ভিজে হাত—শীত হাতখান,
কিশোরের পায়ে-দলা মুথাঘাস,—লাল লাল বটের ফলের
ব্যথিত গন্ধের ক্লান্ত নীরবতা—এরি মাঝে বাংলার প্রাণ:
আকাশে সাতটি তারা যখন উঠেছে ফাুটে আমি পাই টের।