শ্মশানের ফুল/বাসর ঘর
ঐ দেখ্ ঐ চোখের উপর
নাচিছে আমার বাসর ঘর;
বালিকা যুবতী বর্ষীয়সী শিশু
সবে মিলে মোরে ডাকিছে বর।
ঐ দেখ এক প্রসন্ন বালিকা
আঁচলে আঁচলে আমার ঘোরে
অপাঙ্গ কটাক্ষে বলিছে কেবল
প্রেমের ভিখারী করিব তোরে।
ঐ দেখ্ আশা প্রেমের অঙ্কুর
উঠিছে হৃদয়ে আকাশ চাহি
কত যে কামনা সাধ অভিলাষ
খেলিছে হরষে সঙ্গীত গাহি।—
দেখ্ সে বালিকা প্রফুল্ল যুবতী
কোরকের শোভা নাহিক তায়;
সে রূপের ছটা, সে রূপের হাসি
গগন মেদিনী উছলে যায়।—
এই নাও বলি সমপিছে কোলে
তনয়-জননী তনয় মোরে
সেই সাথে তার জীবনে জীবনে
বাঁধিছে আমায় অটুট ডোরে।–
এখন যুবতী পরিণত নারী
ফাটিছে অধর হাসির ভরে
বলে দেখ দেখি হও কিনা হও
প্রেমের ভিকারী ইহার তরে।—
এই বলি দৃশ্য মিলাল কোথায়
সহসা এমন হইল কেন?
আঁধার জগত আঁধার অম্বর
প্রলয় কালের প্রকৃতি যেন।—
অকস্মাৎ ঘন চিতাধুম আসি
ছাইল জীবন ছাইল মন;
কতক্ষণ পরে বহু যাতনায়
দেখিলাম চাহি মুছি নয়ন।—
অদূরে সম্মুখে রয়েছে শুইয়া
কোমল শিশুর আবৃত দেহ
যেন জগতের যেন স্বরগের
ধুলি ধুসরিত প্রভূত স্নেহ।–
শূন্য চারিদিক, নাহিকে এসব
কেবল চৌদিকে চিতার ধূম
রয়েছে রমণী শুইয়া চিতায়
উজল করিয়া শ্মশান ভূম।—
মেলিলে নয়ন মুদিলে নয়ন
স্বপ্নে জাগরণে মানসে মোর
অন্য কোন কিছু নাহিক এখন
কেবল চিতার অনল ঘোর।——
সমীর হিল্লোলে সলিল লহরে
বলিছে যেন রে চিতার কথা
রোদে জোছনায় আঁধারে আলোকে
জ্বলিছে অনল যথায় তথা।