বিষয়বস্তুতে চলুন

হেক্‌টর বধ (১৮৭১)

উইকিসংকলন থেকে

হেক্‌টর বধ অন্য সংস্করণ দেখুন

হেক্‌টর-বধ,

অথবা

ঈলিয়াস্ নামক মহাকাব্যের উপাখ্যান-ভাগ!

(গ্রীক হইতে)

শ্রী মাইকেল মধুসূদন দত্ত প্রণীত।

“The Tale of Troy divine.”—Milton.

কলিকাতা।

শ্রীযুক্ত ঈশ্বরচন্দ্র বসু কোং বহুবাজারস্থ ২৪৯ সংখ্যক ভবনে

ইষ্ট্যানহােপ যন্ত্রে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।


১৮৭১।

[মূল্য ১৲ টাকা মাত্র।]

হেক্‌টর-বধ,

অথবা

ঈলিয়াস্ নামক মহাকাব্যের উপাখ্যান-ভাগ!

(গ্রীক হইতে)

শ্রী মাইকেল মধুসূদন দত্ত প্রণীত।

“The Tale of Troy divine.”—Milton.

কলিকাতা।

শ্রীযুক্ত ঈশ্বরচন্দ্র বসু কোং বহুবাজারস্থ ২৪৯ সংখ্যক ভবনে

ইষ্ট্যানহােপ যন্ত্রে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।


১৮৭১।

[All rights reserved.]

মান্যবর শ্রীযুক্ত বাবু ভূদেব মুখােপাধ্যায়

 মহাশয় সমীপেষু।

প্রিয়বর―――

 প্রায় চারি বৎসর হইল, আমি শারীরিক পীড়িত হইয়া, এমন কি, ৩।৪ মাস স্বকর্মে হস্ত নিক্ষেপ করিতে অশক্ত হইয়াছিলাম; সময়াতিপাতার্থে ঊরূপা[] খণ্ডের ভগবান কবিগুরুর জগদ্বিখ্যাত ইলিয়াস নামক কাব্য সদা সর্ব্বদা পাঠ করিতাম। পাঠের সময় মনে এইরূপ ভাব উদয় হইল, যে এ অপূর্ব্ব কাব্য খানির ইতিবৃত্ত স্বদেশীয় ইংলণ্ডভাষানভিজ্ঞ-জনগণের গােচরার্থে মাতৃভাষায় লিখি। লিখিত পুস্তক খানি ৪ চারি বৎসর মুদ্রালয়ে পড়িয়াছিল; এমন সময় পাই নাই যে ইহাকে প্রকাশি। একস্থলে কয়েক খানি কাপির কাগজ হারাইয়া গিয়াছে (৪র্থ পরিচ্ছেদের প্রারম্ভে;) সে টুকুও সময়াভাব প্রযুক্ত পুনরায় রচিয়া দিতে পারিলাম না। বােধ হয়, এতদিনের পর জনসমূহ সমীপে আমি হাস্যাস্পদ হইতে চলিলাম। কিন্তু তুমি এবং তােমার সদৃশ বিজ্ঞতম মহােদয়েরা এবং অন্যান্য পাঠকগণ উপরি উক্ত কারণটী মনে করিয়া পুস্তক খানি গ্রহণ করিলে ইহার শোধনার্থে ভবিষ্যতে কোন ত্রুটি হইবে না। এবং অবশিষ্ট অংশও অতি-শীঘ্র প্রকাশ করিতে যত্নবান হইব।

 এ বঙ্গদেশে যে তোমার অতি শুভক্ষণে জন্ম, তাহার কোনই সন্দেহ নাই; কেননা, তোমার পরিশ্রমে মাতৃভাষার দিন দিন উন্নতি হইতেছে। পরমেশ্বর তোমাকে দীর্ঘজীবী করুন, এই প্রার্থনা করি। যে শিলায় তুমি, ভাই, কীর্ত্তিস্তম্ভ নির্ম্মিতেছ, তাহা কালও বিনষ্ট করিতে অক্ষম।

 মহাকাব্যরচয়িতাকুলের মধ্যে ঈলিয়াস্ রচয়িতা কবি যে সর্ব্বোপরিশ্রেষ্ঠ, ইহা সকলেই জানেন।[] আমাদিগের রামায়ণ ও মহাভারত রামচন্দ্রের ও পঞ্চ পাণ্ডবের জীবন-চরিত মাত্র; তবে কুমারসম্ভব, শিশুপালবধ, কিরাতার্জ্জুনীয়ম্, ও নৈষধ ইত্যাদি কাব্য উরূপাখণ্ডের অলঙ্কারশাস্ত্রগুরু অরিস্তাতলীসের মতে মহাকাব্য বটে, কিন্তু ঈলিয়াসের নিকট এ সকল কাব্য কোথায়? দুঃখের বিষয় এই যে, এ লেখকের দোযে বঙ্গজনগণ কবিপিতার মহাত্মতা ও দেবোপম শক্তি, বোধ হয়, প্রায় কিছুই বুঝিতে পারিবেন না। যদি আমি মেঘ রূপে এ চন্দ্রিমার বিভারাশি স্থানে স্থানে ও সময়ে সময়ে অজ্ঞতা-তিমিরে গ্রাস করি, তবুও আমার মার্জ্জনার্থে এই একমাত্র কারণ রহিল, যে সুকোমলা মাতৃভাষার প্রতি আমার এত দূর অনুরাগ, যে তাহাকে এ অলঙ্কারখানি না দিয়া থাকিতে পারি না।

 কাব্যখানি পাঠ করিলে টের পাইবে, যে আমি কবিগুরুর মহাকাব্যের অবিকল অনুবাদ করি নাই, তাহা করিতে হইলে অনেক পরিশ্রম হইত, এবং সে পরিশ্রমও যে সর্ব্বতোভাবে আনন্দোৎপাদন করিত, এ বিষয়ে আমার সংশয় আছে। স্থানে স্থানে এই গ্রন্থের অনেকাংশ পরিত্যক্ত এবং স্থানে স্থানে অনেকাংশ পরিবর্ত্তিত হইয়াছে। বিদেশীয় একখানি কাব্য দত্তকপুত্ররূপে গ্রহণ করিয়া আপন গোত্রে আনা বড় সহজ ব্যাপার নহে, কারণ তাহার মানসিক ও শারীরিক ক্ষেত্র হইতে পর বংশের চিহ্ন ও ভাব সমুদায় দূরীভূত করিতে হয়। এ দুরূহ ব্রতে যে আমি কতদুর পর্য্যন্ত কৃতকার্য্য হইয়াছি এবং হইব, তাহা বলিতে পারি না।

৬ নং লাউডন্ স্ট্রীট,

চৌরঙ্গী।

ইং সন ১৮৭১ সাল।
শ্রীমাইকেল মধুসূদন দত্ত।
  1. এই শব্দটী ভ্রান্তি বশতঃ একস্থলে ‘ইউরােপ’ লিখিত হইয়াছে। বঙ্গভাষায় ‘Europe’ লেখা যায় না। ‘Eu’ সদৃশ যুগ্ম স্বর আমাদের নাই। ‘ΕUROPA’ ঊরূপা।
  2. “Hie omnes sine dubio, et in omni genezi eloquentiae, procul à se reliquit.”-QUINTILIAN.
    See also
     Aristot: de Poetic.-Cap. 24.

নামাবলী।

বাঙ্গালা। লাতীন। ইংরাজী।
জ্যুস্। Jupiter. Jove.
প্রিয়াম। Priamus. Priam.
অপ্রোদীতী। Venus. Venus.
হীরী। Juno. Juno.
আথেনী। Minerva. Minerva.
ক্রূষা। Chriseis. Chriseis.
ব্রীষীশা। Briseis. Briseis.
অদিস্যূস। Ulysses. Ulysses.
স্কন্দর Paris. Paris.
ঈরীষা। Iris. Iris.
লব্ধিকা। Laodicea. Laodicea.
অত্রী। Æthra. Æthra.
ক্লিমেনী। Clymene. Clymene.
পণ্ডর্শ। Pandarus. Pandarus.
আরেশ। Mars. Mars.
সর্পীদন। Sarpedon. Sarpedon.
পশ্বেদন। Neptune. Neptune.
আয়াস। Ajax. Ajax.

পরিচ্ছেদসমূহ (মূল গ্রন্থে নেই)

সূচীপত্র

এই লেখাটি ১ জানুয়ারি ১৯২৯ সালের পূর্বে প্রকাশিত এবং বিশ্বব্যাপী পাবলিক ডোমেইনের অন্তর্ভুক্ত, কারণ উক্ত লেখকের মৃত্যুর পর কমপক্ষে ১০০ বছর অতিবাহিত হয়েছে অথবা লেখাটি ১০০ বছর আগে প্রকাশিত হয়েছে ।