କ୯୬ ভ্রাতৃদ্বয় বৈরভাব দূরে গেল, ভ্রাতৃস্নেহে উভয়ের হৃদয় উথলিল, উভয়ে উভয়কে স্নেহে আলিঙ্গন করিলেন। প্রতাপের মহত্ত্ব ও প্রতাপের বীরত্ব দেখিয়া অদ্য শক্তের বৈরভাব তিরোহিত হইয়াছে, বহু বৎসরের ভ্রাতৃবিরোধ তিরোহিত হইয়াছে। ভ্রাতার নিকট ভ্রাতা ক্ষমা যাচঞা করিতেছে, প্রতাপ কি সেই স্নেহদানে বিরত হইবেন? প্রতাপ পূৰ্বদোষ বিশ্বত হইলেন, সাশ্রনয়নে হৃদয়ের ভ্রাতাকে হৃদয়ে ধারণ করিলেন। যে দুইজন মোগল প্রতাপের পশ্চাদ্ধাবন করিয়াছিল, তাহারা কোথায়? শক্ত দূর হইতে তাহাদিগকে দেখিয়াছিলেন, ভ্রাতার প্রাণনাশের সম্ভাবনা দেখিয়া অব্যর্থ বর্শায় সে মোগলদিগের প্রাণনাশ করিয়াছেন। সন্ধ্যার ছায়া সেই নিৰ্জন উপত্যকায় অবতীর্ণ হইতে লাগিল, পর্ব্বতের উপর আরোহণ করিতে লাগিল। সেই নির্জন নিঃশব্দ উপত্যকায় দুই ভ্রাতা অনেকদিনের অপহৃত ভ্রাতৃস্নেহ পাইলেন, অনেক দিনের হারাধন পাইলেন। স্নেহ হৃদয়ে লীন হয়, একেবারে শুষ্ক হয় না, সেই লীন স্নেহধারা অদ্য বীর্যহৃদয়ের হৃদয়কে প্লাবিত করিতে লাগিল। অনেকক্ষণ পর। প্রতাপসিংহ কহিলেন, “ভাই শক্ত। আজি প্রতাপের পরাজয়ের দিন নহে, আজি বিজয়ের দিন; আজ যে অপহৃত ধন ফিরিয়া পাইলাম, যুদ্ধের পরাজয় তাহার নিকট কি তুচ্ছ! ভাই! যেন আমরা পূর্বের বিদ্বেষ চিরকাল বিশ্বত হই, যেন আমাদের চিরকাল এইরূপ স্নেহ থাকে। ভাইয়ে ভাইয়ে মিলিত হইয়া স্বদেশ রক্ষা করিব, বিদেশীয় শক্রকে ভয় করিব না, দিলীশ্বর ও মানসিংহকে ভয় করিব না।” gabe Ne