সেকালের সুখদুঃখ y W989) বিড়ম্বনা ভোগ করিতে হয়। সেকালে সুবিচারের স্বাক্ষ্মবন্ত্র ছিল না, সুতরাং কাহাকেও বিচার-বিড়ম্বন ভোগ করিতে হইত না। অনেক বিষয়ে অসুবিধা ছিল; কিন্তু অনেক বিষয়ে সুবিধাও ছিল। পথ-ঘাট ছিল না, ত্বরিত গমনের সদুপায় ছিল না, দাতব্য-চিকিৎসালয় এবং বিনামূল্যে বিতরণীয় ঔষধালয় ছিল না।;-কিন্তু লোকের ধনধান্য ছিল, স্বাস্থ্য ও বাহুবল ছিল; হা অল্প! হা অন্ন! করিয়া দেশে দেশে ছুটিয়া বেড়াইবার বিশেষ প্রয়োজন হইত না। লোকে ঘরে বসিয়া হাতে-লেখা ভুলটকাগজের রামায়ণ মহাভারত পড়িত, অবসর সময়ে কবিকঙ্কণের চণ্ডীর গান গাহিত, এবং আপনি আপনি বাসস্থলীতে নিপুণভাবে, প্রসন্নচিত্তে, আপনি কার্য্যে নিযুক্ত থাকিত। অভাব অল্প হইলে দুঃখ ও অল্প হইয়া থাকে। সভ্যতাবিরোধী সুচিকুণ সুক্ষ্ম-বস্ত্রের জন্য সকলেই লালায়িত হইত না; দেশের মোটা ভাত মোটা কাপড়েই অধিকাংশ লোকের এক রকম দিন চলিয়া যাইত। পাঠশালায় গুরুমহাশয়ের অথবা তাহার বেত্রিদণ্ডের মহিমায় যথাসম্ভব বিদ্যাভ্যাস করিয়া, বালকের অবসর-সময়ে মাঠে মাঠে ছটাছুটি করিয়া বেড়াইত; কখনও বা ঘোড়া ধরিয়া তাহার অনাবৃত পৃষ্ঠে নিতান্ত অসঙ্গীতরূপে এক জনের স্থানে দুই তিন জন চাপিয়া বসিত; কখনও বা বর্ষার জলে নদ, নদী, খাল, বিলে ঝাপাঝাপি করিয়া সাতার কাটিত; সময়ে অসময়ে গৃহস্থের গরু বাছুর চরাইয়া, হাট বাজার বহিয়া, দিনশেষে ঠাকুরমার উপকথায় হু দিতে দিতে স্নেহের কোলে ঘুমাইয়া পড়িত। যুবকদল দিবসে তাস পাশা খেলিয়া, দাবী ব’ড়ে টিপিয়া, বৈকালে লাঠি তরবারি ভাজিত; সন্ধ্যা-সমাগমে সযত্ন-বিন্যস্ত লম্বা