পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/২৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অধ্যাপক २२७ কানাইয়ের চিঠিতে যেমন একটু পেয়েছিল উৎসাহ, তেমনি চিরদিনের বন্ধু স্বকু-দা যে আজ সরে দাড়াল এতে সে অত্যন্ত মুষড়ে পড়েছিল। মঞ্জরী আসত প্রায় রোজই । কানাইয়ের চিঠির কথা সে শুনেছিল এবং তখনই সন্দেহ করেছিল যে কানাই ও সুজাতার মধ্যে নিশ্চয়ই কোন একটা ঘটনা ঘটেছে । সে ঘটনা যে ঠিক কি রকম তা জানবার জন্য সে ব্যাকুল হয়ে উঠল । প্রভাকে, সুজাতাকে, এমন কি, প্রভাদের বাড়ী গিয়ে রঞ্জনকে পর্য্যস্ত সে নানা নিপুণ প্রশ্ন করে গোপনীয় তথ্য আহরণের চেষ্টা করতে লাগল, কিন্তু কোন ক্রমেই সেই একটি দিন চায়ের টেবিলের দেখা ছাড়া তাদের সম্বন্ধে সে কোনও তথ্য আবিষ্কার করতে পারল না। নিরন্তব নানাপ্রকার সন্দেহ তার মনে উঠতে লাগল । অবশেষে নানা রকম কল্পনা করে করে ক্লান্ত হয়ে মনে মনে এই সিদ্ধান্ত করল যে নিশ্চয়ই কানাই তার চায়ের টেবিলের গরম বক্তৃতায় স্বজাতার মনকে শক্ত করে’ নাড়া দিয়েছে। এখন শুধু এইটুকু লক্ষ্য রাখতে হবে যে সুজাতা ও কানাইয়ের চটুপটু দেখাশোনা যাতে না হয় । অৰ্দ্ধভুক্ত দ্রব্যের ন্যায় সে কানাইকে মনে মনে একরকম পরিত্যাগ করেছিল, কারণ কানাইকে না ছাড়লে মুকুমারের স্বন্ধে আরোহণ করা অসম্ভব । কিন্তু অনেক এমন প্রকৃতির লোক আছে যে নিজের জন্য যা আসে তা নিজে না খেতে পারলেও আপরে যে খাবে সেটা সহ্য করতে পারে না । একটা কাল্পনিক দখলীস্বত্ব তাদের পড়েই থাকে । একটা জায়গা হয় ত আমি কিনব কিনব করে কিনতে পারলুম না, কিনলে আর একজন লোকে । খেতে খেতে খানিকট খেতে পারলুম না, রাথলুম ঢাকা দিয়ে, যদিও নিশ্চিত জানি যে দ্বিতীয়বার খাবার সময় যাবে সেটা পচে, তবু প্রাণে ধরে সেটা কাউকে দিতে পারি না।