পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৪৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8& o অধ্যাপক একটা অভূতপূর্ব্ব আবেগ অমুভব করে, যে রকম আবেগ অনুভব করে একটা কুকুট যখন সে ডিমের উপর বসে’ তা দেয় । এটা একটা স্বষ্টির আবেগ, সৃষ্টির আত্মপ্রকাশের চেষ্টা, সুজাতার মধ্যে এই আবেগ কখনও দৈহিক পথে সঞ্চারিত হবার অবসর পায় নি। মুকুমারকে সে ভালবাসত, কিন্তু বাল্যকাল থেকে সে ভালবাসা ছিল অন্যরকম সংস্কারে জড়িত। সুকুমার ধরতে পারে নি তার সামনে সে রকম একটা ছবি যা পারত তার অন্তরের স্রোতকে দেহের দিকে নামিয়ে আনতে । কানাইয়ের সঙ্গে প্রথম দেখাতেই স্বজাতার অবচেতনাগত মন চিনে নিয়েছিল তার মানুষটিকে, কিন্তু জ্ঞাতমন দিলে না সে দিকে সাড়া । কানাইকে সে দেখলে আত্মপ্রকাশের তাড়াতে ব্যগ্র। স্বজাত করলে তার প্রতিধ্বনি । সেও ছুটল আত্মপ্রকাশের তাড়ায় এবং এই পথে তার আবেগ পেল মুক্তি, কর্ম্মের মধ্যে সে ফিরে পেলে তার চিত্তের স্বাস্থ্য । তাই সে ছুটুল কর্ম্মের দিকে । সে নারী, স্নেহের ক্ষুধা তার কম নয়। সে ক্ষুধা মুক্তি পেল অধ্যাপকের প্রতি বাৎসল্যে, শ্রদ্ধায়, ভক্তিতে, সে ক্ষুধা মুক্তি পেল স্নেহাস্পদের জন্য বিরাট বিজ্ঞান মন্দিরের কর্তৃত্ব নিয়ে। এইটি হ’ল তার গৃহিণীপনার ক্ষেত্র । তবু সে ক্ষুধা অধ্যাপকের ভালবাসার মধ্যে পূর্ণকাম হ’তে পারল না। যেটুকু রইল অবশেষ সেটুকু ছুটুল কানাইয়ের দিকে, কিন্তু তা গোপন করে’ রাখতে হ’ল হৃদয়ের মধ্যে যেমন গোপন করে রাখে পদ্মকোরক মধুবিন্দুকে তার শতপত্রদলের আবরণে,তার কিয়ন্ধাভৰুণের মধ্যে। পদ্মকোরকের মুখ থাকে বন্ধ, তাই ভ্রমরের সেখানে আনাগোনা নেই। তার মধু থাকে গোপনে তার নালের প্রান্তে । কানাইয়ের প্রতি যে শ্রদ্ধা ও পূজা উপচিত হয়ে উঠেছিল সুজাতার হৃদয়ের মধ্যে, তার সমস্তটুকুকে ব্যাপ্ত করেছিল কানাইয়ের প্রতি একটি ভালবাসা, নবনীত যেমন ব্যাপ্ত করে দুগ্ধের