পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/২০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রিদয় আরো ভয় পেয়ে শোধালে –‘গণেশ গেলেন কোথা ? তার দেখা পেলে যে আমি পায়ে ধরে মাপ চাই। এবার যদি তিনি আমায় মানুষ করে দেন, তবে নিশ্চয় বলছি কোনো দিন সন্দেশ চুরি করে খাব না, খেয়ে আর মিছে কথা বলব না, পড়বার সময় আর মিছি-মিছি মাথা ধরবে না, তেষ্টাও পাবে না ; গুরুমশায়কে দেখে আর হাসব না, বাপ-মায়ের কথা শুনব ; রোজ তোমার চন্নামেত্তে৷ খাব, একশো দুর্গানাম লিখব। এবার থেকে বামুনের দোকানেব পাউরুটি আর হাসের ডিম ছাড়া অন্য কিছু ছুই তো গঙ্গাস্নান করব।” এমনি ভালোমানুষ হবার যত-কিছু প্রতিজ্ঞ কোনোটা করতে রিদয় বাকি রাখলে না! কিন্তু এতেও গণেশ খুশি হয়ে তাকে মানুষ করে দিতে ঘরে এলেন না দেখে বাইরেটায় সে একবার গণেশকে খুজে দেখবার মতলবে দরজার ফঁাক দিয়ে গলে বেরুল । পাড়াগায়ের সব বাড়ি যেমন, রিদয়দের বাড়িও তেমনি ছিল —‘পুত্বে হল, পশ্চিমে বঁাশ, উত্তর বেড়ে, দক্ষিণ ছেড়ে ? ঘরের দাওয়া থেকে নেমেই একহাত-অন্তর একখানা চৌকো টালি পাতা রয়েছে। এমনি নানা দিকে সোজা-বাকা, ভাঙা আস্ত টালিগুলো মাটির উপরে যেতে রাস্ত হয়েছে –পুকুর-পাড়ে যাবার, গোয়ালে যাবার, হেঁসেলে ঢোকবার। বর্ষার সময় যখন জলে সব ডুবে যায়, তখন এই টালির উপর পা ফেলে চলে যাও, একটুও পায়ে জল লাগবে না। আবার যেখানে জল যাবার নালা, তার উপরে এপার-ওপার করবার জন্যে ফুটুকরে। নারকোল গাছের গুড়ি পাটাতন করে পাত, পুলের মতো তার উপর দিয়ে সোজা চলে যাও । রিদয় এখনো থেকে-থেকে ভুলে যাচ্ছে যে সে আর বড়ো নেই, ঘরের দাওয়া থেকে আগেকার মতো লাফিয়ে নামতে গেছে, আর অমনি চিৎপাত ! মনে হল যেন একতলার উপর থেকে পড়েছে ! ভাগ্যি এক-অঁাটি খড়ের উপরে পড়েছিল, না হলে রিদয় সেদিন টের পেতেন বেড়াল-ছানাকে দাওয়া থেকে হঠাৎ ঠেলে ফেললে, কতটা তার লাগে । نه لا