পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

업 বনে বসন্তকাল এসেছে । চমৎকার দিনগুলি—আলো-ছায়ায় নিবিড় বনের সবুজে ঢাকা পথে-পথে, তার নিস্তব্ধ রাতগুলি—রাঙাফুলে ঢাকা অশোক গাছের দোলনায়, কুঁকড়ে আর সোনালিয়া ফুটিতে আনন্দে কাটাচ্ছেন। এমন সবুজ, এমন ঠাণ্ড ছায়ায় ছায়াময় সে বন, যেন মনে হয় মায়ের কোলে এসেছি। সেইখানে কুঁকড়ে আস্তে আস্তে সব কষ্ট ভুলতে লাগলেন। সকাল থেকে সন্ধে তিনি বেড়িয়ে বেড়ান, একলাটি । চারি দিকে বড়ো বড়ো দেবদারু আর ঝাউ, এত পুরোনো যে তাদের বয়স কেউ জানে না। ডালে ডালে সব সবুজ শেওলা জটার মতো ঝুলে পড়েছে ; শিকড়গুলো তাদের পাথর আঁকড়ে কোন পাতালে যে নেমে গেছে তার ঠিক নেই। কোথাও বুর-কুর করে পাতা ঝরছে, কোথাও ঝাউ ফলগুলোয় মাটি একেবারে বিছিয়ে গেছে। একটা নালার ধারে ঝরনা ঝরছে, তারি এক পাশে ব্যাঙের ছতরি বেঁধে হাট বসিয়েছে । কত রকমের পাখি গাছে গাছে । কাঠবেড়ালি সব বাদামগাছের ডালে-ডালে লাফালাফি করে বেড়াচ্ছে ; খরগোশ ঘাসের মধ্যে লুকোচুরি আর কপাটি খেলছে। বনে এসেই রগোশগুলোর সঙ্গে কুঁকড়োর ভাব হয়ে গেল ; কিন্তু তারা ফ্যাল-ফ্যাল করে চেয়ে থাকে, সোনালিয়া সেটা সইতে পারে না ; এক-একদিন কুঁকড়োর আড়ালে ডানার ঝাপটা দিয়ে তাদের ভয় দেখাতে ছাড়ে না । একটা কাঠঠোকরার সঙ্গে কুঁকড়োর খুব জমে গল। অশোক গাছটার পাশেই একটা কাঠাল-গাছে তার কোটর। দিনের মধ্যে দশবার সে কুঁকড়োর সঙ্গে গল্প করতে এসে হাজির হয়। সোনালিয়া কিন্তু এটা ভারি অপছন্দ করে ; সময় নেই, অসময় নেই, এলেই হল ? শেষে কাঠঠোকরার সঙ্গে বন্দোবস্ত হল, আসবার আগে সে তিনবার ঠকঠক আওয়াজ দিয়ে তবে আসবে। (بين مb