পাতা:অভিযাত্রিক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

काछियायिक SR 9 বিশেষ কিছু নেই-গোলায় পিড়ি পড়ে আছে, গোলা বহুকাল অন্তহিঁত, সংস্কার অভাবে অট্টালিকার জীর্ণ দশা, ফাটলে বট অশ্বখের গাছ, সাপেরু খোলস । যে ক’জন ছেলে-ছোকরা এই তিন বাড়িতে থাকে, সন্ধ্যাবেলায় তারা মুখুয্যে-বাডির চণ্ডীমণ্ডপে বন্ড তাসের আডিডা বসায়-দাবাও চলে। এর কোনো কাজ করে না, লেখাপড়ার ধারও ধারে না । অর্থ উপার্জনের ক্ষমতা এদের মধ্যে যা ছিল, তা ক্রমে নষ্ট হয়ে যাচ্চে। দিন কতক পরে এরা সম্পূর্ণ অকৰ্মণ্য প্রকৃতির বেকার হয়ে পড়বে । পল্লীবাসী হিন্দু ভদ্রলোকের এই সমস্যা সর্বত্রই উগ্রমূর্তিতে দেখা দিয়েচে । অর্থ নেই বলেই এদের স্বাস্থ্যও নেই-মনে স্মৃতি নেই, পাঁচিশ বছরের যুবকের মন পঞ্চাশ বছরের বৃদ্ধের মতো নিস্তেজ । আর একটা জিনিস লক্ষ্য কবেচি তা এর চেয়েও সর্বনাশাজনক । পল্লীগ্রামে এই ধরনেবা ভদ্রসন্তানদের মধ্যে পানিদোষ অত্যন্ত ছডিয়ে পডোচে । প্রায় সকলেরই এ দোষটি আছে, যে মদ পয়সা অভাবে না জোটাতে পারে, সে সস্তার তাডি খায় । এর সঙ্গে আছে গাজা ও সিদ্ধি । আমি এই গ্রামেই একটি লোককে দেখলুম। সে বর্তমানে একেবারে ঘোর অকৰ্মণ্য ও স্বাস্থ্যহীন হয়ে পডেচে। পূর্বে সে কোথায় চাকুরি করতো, চাকুরি ছেডে দিয়ে গ্রামে বসে প্রথমটাতে মহা উৎসাহে চাষ-বাস আরম্ভ করে। কিন্তু কৃষিকার্যের সাফল্যের মূলে যে কষ্টসহিষ্ণুতা ও অভিজ্ঞতা প্রয়োজন, তা তার ছিল না, ফলে হাতের টাকাগুলি নষ্ট হতে দেরি হয়নি । এখন বাডি বসে গাজা খায় এবং নাকি হরিনাম করে । এ গেল পুরুষদের কথা । মেয়েদের জীবন আরও দুঃখময় । তাদের জীবনে বিশেষ কোনো আনন্দ-উৎসবের অবকাশ নেই, ধানভানা, রান্না, সংসারের দাসীবৃত্তি এই নিয়েই তাদের জীবন । অবসর সময় কাটে পরোয়