পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া \S) თ জ্ঞানদা বিস্মিত হইয়া মুখ ফিরাইয়া কহিল, আমার চিঠি আবার কোথায় মা ? তোমাকেই তো লিখেছেন । দুৰ্গা একটুখানি হাসিয়া বলিলেন, আমি দেখতে চাই না, শুনলেই সুখী। রাগ করেচে, সে ত আমি বুঝতেই পারাচি। না মা, আমাকে তিনি আলাদা চিঠি-পত্র কিছুই লেখেননি। যা লিখেছেন, তা ওই।-বলিয়া মেয়ে পুনরায় পাশ ফিরিয়া শুইল । সবে দু'ছত্র ? আর কোন কথা নেই ? বলিয়া দুৰ্গা স্তব্ধ হইয়া গেলেন। তঁহার যে আঙ্গুলগুলা এতক্ষণ মেয়ের চুলের মধ্যে নানা প্রকার বিচিত্র গতিতে বিচরণ করিয়া ফিরিতেছিল, সেগুলাও যেন হাড়ের মত শক্ত হইয়া উঠিল ; এইভাবে অনেকক্ষণ নিঃশব্দে বসিয়া থাকিয়া তিনি উঠিয়া গেলেন । আবার দিন কাটিতে লাগিল । is প্রথম অগ্রহায়ণের শীতের বাতাস বহিতেছিল। দুর্গার এক ছেলেবেলার সাখী বাপের বাড়ি আসিয়াছিল। আজ দুপুরবেলা মেয়েকে একটু ভাল দেখিয়া দুৰ্গা তাহার সহিত দেখা করিতে বাহির হইয়াছিলেন। পথে ডাক-পিয়নের সাক্ষাৎ পাইয়া ডাকিয়া বলিলেন, হাঁ দাশু, আমার নামের চিঠি-পত্র পাচ্চিনে কেন ? দাশু হাসিয়া কহিল, চিঠি না এলে কি করে পাবে, দিদিঠাকরুন ? দুৰ্গা সন্দিগ্ধ-স্বরে বলিলেন, আমার কিংবা আমার মেয়ে জ্ঞানদা দেবী- কারু নামেই কি চিঠি আসে না ? দাশু কহিল, এলে তা আমিই দিয়ে যেতাম, দিদিঠাকরুন। } দুৰ্গা বলিলেন, না দাশু, তোমার ব্যাগটা একটু ভাল করে দেখ,