পাতা:অসমীয়া সাহিত্য.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রীমন্ত শঙ্করদেব ও পরবতীগণ O Go. রচনা করেন। মাধব কন্দলী ছিলেন কবি, অনন্ত কন্দলী ছিলেন ধর্মপ্রচারক। পরবতীকালে শঙ্করদেব মাধবদেব, অনন্তষ্ঠাকুর আতা, রঘুনাথ মহন্ত, কবি শত্রসঙ্গয় (‘শ্রীরামদাসর চেটা শত্রুঞ্জয় নাম), কবি গঙ্গারাম (‘গঙ্গারামদাসে সীতার বনবাস রচে), কবি ভবদেববিপ্র (শ্রীরামচন্দ্রের অশবমেধযজ্ঞ), কবি শ্রীচন্দ্রভারতী (মহীরাবণ বধ), কবি ধনঞ্জয় (গণকবেশী হনুমানের মাহাত্মাকগীতীন-গণকচরিত্র), প্রভৃতি কবিগণ রামায়ণ সম্বন্ধে পদরচনা করিয়া যশস্বী হইয়াছিলেন। গদ্যেও রামায়ণের গল্প সংযুক্ত রামকরতী নামে মন্দ্রপুথি এখনও পাওয়া যায়। শ্রীযন্ত বিরিন্টিকুমার বরয়া বায়কেরতী’ পথি হইতে রামায়ণী কথা উদ্ধার করিয়াছেন— "রামচন্দ্রে দেখে হনুমন্ত বন্ধ গৈলা । দেখি রামচন্দ্র অমত হাতে পরিশিল । রামর হাতে হনুমন্ত বীর উঠিলা। উঠি হনুমন্তে রামের চরণ পরশিলা ..” পরবতী যুগে কথারামায়ণ বিশেষ প্রচলিত ছিল। তাহার গদ্যের একটু নমনা উদ্ধত করিতেছি। দশরথের মৃত্যুর পর ভরত রামচন্দ্রকে ফিরাইয়া আনিতে বনে গিয়াছেন। শ্রীরামচন্দ্র বলিতেছেন— “জলবদব্দসম অথির শরীর তার প্রিতিসাধি পিতৃবাক্য ছারিবো .. যে শরীর কৃমি বিষ্ঠা ভস্ম হৈব হেন শরীরত মোহ করি কোন দুজনে পিতৃরবাক্য ছাড়িব . . বনতে মোর বৈকুন্ঠ সুখ মোক লাগি কেহ আর শোক না করিবা .. ইতি শ্রীবাল্মীকি মহাঋষিকৃত অযোধা কাণ্ডকথায়াং শ্রীরঘুনাথ কৃতয়মাটমোহধ্যায়।” ৪. শ্রীমন্ত শঙকরদেব ও প্রাচীন অসমীয়া সাহিত্যের গৌরবময় যােগ বৈষ্ণবযুগ এবং এই যুগের মধ্যমণি হইতেছেন মহাপুরুষ শ্রীমন্ত শঙ্করদেব, মাধবদেব ও তাঁদের শিষ্যপ্রশিষ্যগণ । বাংলাদেশে যখন প্রেমবনা নিতাই হইতে অদ্বৈত-তরঙ্গ তাতে, চৈতন্য বাতাসে উথলিল, আকাশে লাগিল ঢেউ প্রায় ঠিক সেই সময়ে আসামে মহাপর্ষ শঙ্করদেবের আবিভাব। মহাপুরুষীয় সাহিত্য ও বৈষ্ণববাদ আলোচনা করিবার প্বে এই কথাটা বিশেষভাবে মনে রাখা প্রয়োজন যে মহাপুরুষ শঙ তখনকার দিনের বিকৃত তন্ত্রবাদের বিরুদ্ধে প্রচন্ড অভিযান। প্রধানতঃ বৈষ্ণববাদের উপর ভিত্তি করিয়া তিনি একেশ্বরবাদ প্রচার করিলেন। সবচেয়ে বড় বিসময়ের কথা যে, এই মহাপুরুষ ব্রাহয়ণ না হইয়াও নিজের চরিত্র, বিদ্যা, বৃদ্ধি ও ভগবদ্ধভক্তির প্রেরণায় ব্রাহয়ণ ও ব্রাহণেতর সব জাতির গরে হইলেন। শ্রীশঙ্করদেবের চরিতকার দ্বিজ রামানন্দ বলেন যে সেই সময়ে সারা কামরুপ বিকৃত তন্ত্রাচার ও ধমের নামে ব্যভিচারে পণ ছিল। রাতিখোয়া’ ও ‘ভোগী দলের কথা ও কাহিনী সেদিনও শোনা যাইত। কামরপ অনুসন্ধান সমিতি এইসব কাহিনীর উদ্ধার করিয়াছেন। এই পরিবেশের মধ্যেই মহাপুরষ শঙ্করদেবের আবিভাব। শঙ্করদেব শিরোমণি ভূইয়া চণ্ডীবর বংশে জন্মগ্রহণ করেন। এই ভুইঞারা সামন্ততান্ত্রিক নরপতি ছিলেন এবং দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে রাজত্ব করিতেন। শতকরদেব প্রথম জীবনে অন্যান্য সকলের মত সংসারধম ও গাহস্থ্যিজীবন যাপন করেন। সন্তপ্রধান ভক্ত কবীরের সঙ্গে তাঁহার প্রগাঢ় বন্ধত্বে হয়। ক্রমশঃ তিনি আচার্য রামানজের বিশিষ্টাদ্বৈতবাদের প্রতি আকৃষ্ট হন। কেহ কেহ বলেন যে তিনি অদ্বৈতাচাষের শিষ্য ছিলেন ও তাঁহার নিকট শাস্ত্রাধ্যায়ন করিতেন, পরে মতভেদ হওয়ায় চলিয়া