পরিত্যাগ করিয়া যাইতে পারি না, আমি গেলে, ইহার কষ্টের সীমা থাকিবে না, ইনি যত দিন জীবিত থাকিবেন, আমি অন্যত্র কুত্রাপি যাইতে পারিব না। এই বলিয়া, সে কাহারও প্রস্তাবে সম্মত হইত না।
এইরূপে, নিরুপায় হেনল্ট যতদিন জীবিত রহিলেন, ডিমলিন, সাধ্যানুসারে তাঁহার পরিচর্য্যা ও প্রাণরক্ষা করিল। কিন্তু, সে তাঁহার কত দূর পর্য্যন্ত উপকার করিতেছে, তিনি তাহা বুঝিতে পারিতেন না। ডিমলিনের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন দূরে থাকুক, তিনি, অকারণে কুপিত হইয়া, সর্ব্বদা তাহাকে প্রহার করিতেন, ডিমলিন তাহাতেও রুষ্ট বা অসন্তুষ্ট হইত না। বিশেষতঃ, সে তাঁহার নিকটে যে তেইশ বৎসর কর্ম্ম করিয়াছিল, তাহার পনর বৎসরের বেতন পায় নাই। ইহাকেই নিঃস্বার্থ পরোপকার বলে। ফলতঃ ডিমলিনের আচরণ দয়া, ভদ্রতা ও প্রভুভক্তির অদ্ভুত দৃষ্টান্ত।
পারিস নগরে ফ্রেঞ্চ একাডেমি নামে এক প্রসিদ্ধ সমাজ আছে। সৎকর্ম্মে লোকের উৎসাহ বর্দ্ধনের নিমিত্ত, সমাজের অধ্যক্ষেরা প্রতিবৎসর এক এক পারিতোষিক প্রদানের ব্যবস্থা করিয়াছেন। তাঁহাদের বিবেচনায় যে ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা প্রশংসনীয় সৎকর্ম্ম করে, সে ঐ পুরস্কার পায়। ডিমলিনের আচরণ শ্রবণে, তাঁহারা এত প্রীত হইলেন যে, সে ঐ বৎসরের পুরস্কারের সর্বাপেক্ষা অধিক যোগ্য, ইহা স্থির করিয়া, তাহাকেই ঐ পারিতোষিক প্রদান করিলেন।