পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভ্রাতৃবিরোধ।
৬৩

পরিত্যাগে সম্মত করিতে পারিলেন না। তখন তিনি, যৎপরোনাস্তি বিরাগ ও অসন্তোষ প্রদর্শন পূর্ব্বক, চলিয়া গেলেন।

 অনন্তর, উভয়েই, কর্ত্তব্য নিরূপণ নিমিত্ত, এক এক উকীলের নিকটে গমন করিল, এবং, তথায় অভিলাষানুরূপ উপদেশ ও পরামর্শ পাইয়া, নিরতিশয় উৎসাহ সহকারে, বিবাদে প্রবৃত্ত হইল। এক স্থানে জ্যেষ্ঠের জয়, অপর স্থানে কনিষ্ঠের জয়, এইরূপে কতিপয় বৎসর ব্যাপিয়া, মোকদ্দমা চলিল। অবশেষে, সর্ব্বশেষ বিচারালয়ে সমাংশের ব্যবস্থা অবধারিত হইল। তখন উভয়কেই অগত্যা সেই ব্যবস্থা শিরোধার্য্য করিয়া লইতে হইল।

 মোকদ্দমার ন্যায্য ব্যয় তাদৃশ অধিক নহে, কিন্তু আনুষঙ্গিক ব্যয় এত অধিক যে, দীর্ঘ কাল তাহাতে লিপ্ত থাকিলে, প্রায় সর্ব্বস্বান্ত হইয়া যায়। তাহাদের হস্তে যে টাকা ছিল, কিছু দিনের মধ্যে, তাহা নিঃশেষ হইয়া গেল, সুতরাং, টাকা সংগ্রহ করিবার নিমিত্ত, উভয়কেই ভূমি সম্পত্তির কিয়ৎ অংশ বিক্রয় করিতে ও কিয়ৎ অংশ বন্ধক রাখিতে হইল। যে উদ্যানের নিমিত্ত এত আগ্রহ ও এত আক্রোশ, তাহাও, দীর্ঘ কাল উপেক্ষিত হইয়া, শ্রীভ্রষ্ট ও অকিঞ্চিৎকর হইয়া গেল। যখন মোকদ্দমার নিষ্পত্তি হইল, সে সময়ে উভয়ের এত ঋণ হইয়াছিল যে সর্ব্বস্ব বিক্রয় করিলেও, পরিশোধ হইয়া উঠিবে না। তাহারা, অহঙ্কারে মত্ত হইয়া, এবং প্রতিবেশিগণ ও আত্মীয়বর্গের উপদেশ অগ্রাহ্য করিয়া, বিবাদে প্রবৃত্ত হইয়াছিল, এক্ষণে