পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২৬ আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী এখন কথা হচ্চে এই যে আমরা ‘বাঙ্গালী জাতি’, ‘ইণ্ডিয়ান নেশন’ বলে চীৎকার করি, একটা গোটা জাতি বলে জগৎ সমক্ষে পরিচুয় দেই । কিন্তু জাতির ভেতর কত রকম গলদ, কত দুর্ব্বলতা রয়েছে, তা একবার স্থিরচিত্তে ভেবে দেখতে হবে। মানুষ মানুষের হাতে থাবে না, মানুষ মানুষের ছায়াটি পর্য্যস্ত মাড়াবে না, একথা বাইরের লোকে স্বপ্নেও ভাবতে পারেন। হিন্দু ভারতের ব্যুইরে এসব কথা লোকে ধারণাই কর্ডে পারে না ; কোৱা; ভীল,সাওতাল, গারো–তাহার পর্য্যস্ত ধারণা করে 'পারে না, মানুষ মানুষকে ছুলে অপবিত্র হয় কিরূপে। মহাত্মা গান্ধী বলিয়াছেন যে উচ্চশ্রেণীর হিন্দুরা কুকুরকেও কোলে করে আদর করে কিন্তু একজন মানুষ এলে তাকে একেবারে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে । সম্প্রতি মান্দ্রাজে একটা ঘটনা ঘটেছে । একজন প্যারিয়া পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে, পবিত্র ধর্ম্মভাবের আবেগে মন্দিরের সম্মুখস্থ হয়—আত্মবিশ্বত হয়েই সে মন্দিরের সম্মুখীন হয়েছিল । তাহার মোহ, অপসারিত হ’লে সে মন্দির ছেড়ে চলে আসছিল এমন সময় ধরা পড়ে গেল । ‘মন্দির অপবিত্র হয়েছে— সর্ব্বনাশ হয়েছে’ ইত্যাকার কোলাহলের মধ্যে ঐ লোকটাকে চৈার, ডাকাত কিম্বা, খুনী আসামীর মত অপরাধীজ্ঞানে পুলিশের হাতে সমর্পণ করা হইল। উচ্চশ্রেণীর হিন্দু বিচারপতি তাহার জরিমানা করিলেন-কারাদণ্ডের ব্যবস্থা দিলেন । এই লঘুপাপে গুরুদণ্ডের ব্যবস্থা দেখে অসহযোগ আন্দোলনের প্রধান নেতা শ্রীযুক্ত রাজাগোপাল আচারী নিজকে আর সামূলে রাখতে পারলেন না। তিনি ঐ প্যারিয়ার পক্ষাবলম্বন করে উচ্চ আদালতে আপীল করলেন। আপীলে লোকটা নিষ্কৃতি পেল—জেল আর হু’ল না । জজ একটা টেকনিক্যাল গ্রাউণ্ডে তাকে মুক্তি দিলেন—বল্লেন ইচ্ছাকৃত অপবিত্র করার কোন