পাতা:আদর্শ হিন্দু হোটেল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আদশ হিন্দী-হোটেল 8 বাঁশঝাড়ে কাট-কটা করিয়া শকিনো বাঁশের শব্দ হইতেছে-ঘন ছায়া, শকিনো বাঁশপাতার ও সোলার শব্দ। ফিঙ্গে, শালিখা পাখীর কলরবহাজারির মনে হইল, আজ যেন তার হোটেলের দাসত্ব-জীবন গতে মন্তির দিন। সেই ভীষণ গরম উননের সামনে বসিয়া আজ আর তাকে ডেকচিতে ভাত-ডাল রান্না করিতে হইবে না। পদ্ম ঝিয়ের কড়া তাগাদা ও মরবিয়ানা সহ্য করিতে হইবে না। বাঁশবনের ছায়ায় পণ্য শান্তিতে সে যদি ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরিয়া ঘামায়-তােহা হইলেও কেহ কিছু বলিতে পরিবে না। এই মাক্তি সে ভাল ভাবেই আসবাদ করিতে চায় বলিয়াই তো হোটেল খলিবার কথা এত ভাবে। সে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করিয়াছে, এইবার কিছু টাকা হইলেই সে রাণাঘাটের বাজারে হোটেল খালিয়া দিতে পারে। হাজারি সত্যই চিন্তা করিতে আরম্ভ করিল, টাকা কোথায় ধারা পাওয়া যাইতে পারে। এক গ্রামের গোঁসাইরা বড় লোক, কিন্তু তাহারা প্রায় সবাই থাকে কলিকাতায়। এখানে বন্ধ কেশব গোঁসাই থাকেন বটে-কিন্তু লোকটা ভয়ানক কৃপণ-তিনি কি হাজারির মত সামান্য লোককে বিনা বন্ধকে, বিনা জামিনে টাকা ধার দিবেন ? হাজারির জামিন হইবেই বা কে! তাহার অবস্থা অত্যন্তই খারাপ। দ’খানা মাত্র চালাঘর। রান্নাঘরখানা গত বিষায় পড়িয়া গিয়াছে-পয়সার অভাবে সারানো হয় নাই-উঠানের আমতলায় রান্না হয়—বলিিটর দিন এখন ক্রমশঃ চলিয়া গেল, এখন তত অসংবিধা হয় না। বেলা প্রায় পড়িয়া আসিয়াছে। (i. হাজারি বাড়ী ফিরিয়া দেখিল, তাহার ছোট মেয়ে টেপি ঘরের দাওয়ায় বসিয়া উল বানিতেছে। টোপি বাবাকে দেখিয়া বলিল-তোমার জন্য আসন বনচি বাবা-কাল তুমি যদি থাকো, কালকের মধ্যে হয়ে যাবে। তোমার সঙ্গে দিয়ে দেবো। হাজারি মনে মনে হাসিল। বেচু চাকত্তির হোটেলে সে রঙীন পশমের