পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
আফগানিস্থান ভ্রমণ

ঠাঁই। কোরানের ছেঁড়া পাতাগুলি মোল্লারা নতজানু হয়ে কুড়িয়ে নিয়ে গেল, আমিনার হাড়গুলি যেভাবে ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল তেমনি ভাবেই পড়ে রইল।

 এদিকে জলে সিক্ত মেজের ওপর মামুদ পড়ে রয়েছিল। ঘণ্টা কয়েক পর মামুদের জ্ঞান হয়। আইন অনুযায়ী মামুদ কয়েকখানা রুটি খাবার অধিকার পেয়েছিল। তাকে রুটি দেওয়া হয়েছিল তারপর নিয়ে যাওয়া হয় কাজির কাছে। কাজির বিচারে মাতালের ছয় মাস সশ্রম কারাদণ্ড হয়। মামুদকে পুনরায় জেলে পাঠানো হল। মামুদ জেলে ঢুকে আমিনার কথাই চিন্তা করছিল। আমিনা আজ কোথায় এবং সেই বা কোথায়?

 মামুদকে কাজের আদেশ দেওয়া হল। হুজুরের আদেশ মত ‘হা হুজুর’ বলে কাজে গেল। কতক্ষণ পর জেল দারোগা কি মনে করে মামুদকে পুনরায় ডাকল এবং মামুদকে চুপি চুপি কি বলে ফের কাজে পাঠিয়ে দিল।

 সে কাজ করছিল মন দিয়ে, এমন সময় একটি সুন্দর যুবক জিজ্ঞাসা করল, “মামুদ, দারোগা তোকে কেন ডেকে নিয়ে গিয়েছিল রে?”

 মামুদ মাথা নত রেখেই বললে, “তোমাদের ওপর নজর রাখবার জন্য আমার প্রতি আদেশ হয়েছে।”

 —তুই কেমন করে নজর রাখবি বলতে পারিস?

 —সে কথাতো দারোগা বলে নি!

 এর বেশি আর কথা হল না। কিন্তু মামুদ বুঝলে, এই শিক্ষিত লোকগুলিকে দারোগা ভয় করে। সে জানত সুলতানকে আল্লা পাঠিয়েছেন পৃথিবীতে আইন বজায় রাখতে। তাঁকে যাঁরা সাহায্য করে তারাও খোদার বিশেষ প্রিয়পাত্র। যারা আল্লার ভক্ত তারা কেন এসব শিক্ষিত লোককে ভয় করে, তার কারণ মামুদ নিজের মনের মাঝেই খুঁজছিল কিন্তু উত্তর পাচ্ছিল না।

 মেডিকেল কলেজের আবদ্ধ ছাত্ররা মামুদকে প্রায়ই নানারূপ প্রশ্ন করত, কিন্তু মামুদ কিছুই বলত না। একদিন কিন্তু তাকে মুখ খুলতে হয়েছিল। সে