পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
আফগানিস্থান ভ্রমণ

নেকড়ে বাঘে তাকে খেয়েছে। যদি সমাজ তাকে পরিত্যাগ না করত তবে আমিনা মরত না। বেঁচেই থাকত। আমিনার অপমৃত্যু হয়েছে। মামুদ আমিনার হাড়গুলি জড় করে মাটি খুঁড়ে কবর দিল। শহর হতে একখানা কাঠ সংগ্রহ করে তার উপর লিখল, আমিনার মৃত্যু হয়েছে সমাজের অত্যাচারে। তারপর মামুদ সেই কাঠটি আমিনার কবরের উপর স্থাপন করে মুখ ফিরিয়ে রওয়ানা দিল রুশ সীমান্তের দিকে। শরীর তার অত্যন্ত দুর্বল, এবার রুশ সীমান্তে পৌঁছতে পুরো সাতদিন লাগল। সেখানে পৌঁছে আর সে বৃথা সময় নষ্ট করল না, সরাসরি রুশ দেশে প্রবেশ করে, মজুর দলে ভিড়ে পড়ল, কাজে মন দিল। খাদ্যের অভাবে যে শরীর ভেংগে পড়ছিল, সেই শরীর নতুন করে গড়ে তুলল। মামুদের মনে জাগল বোখারার সমাজের দোষ-ত্র‌ুটি, কুসংস্কার সুধরাবার আকাংখা। এক দিকে কাজ এবং কমিউনিজমের পাঠ মামুদ একই সংগে চালাল।

 দু’ বৎসর রুশ দেশে থেকে মামুদ দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করল, যতদিন মজুর এবং কৃষকের দাবি পূরণ না হবে, যতদিন বোখারাকে সে সোসিয়েলিস্ট স্টেটে পরিণত করতে না পারবে, ততদিন সে রুশ দেশে যাবে না। তারই মত অক্লান্ত কর্মীদের সহায়তায় মামুদ সমাজ-বিপ্লবের প্রবর্তন করল এবং তাতে কৃতকার্য হয়ে আমিনার মত শত সহস্র রমণীকে হারেম হতে মুক্ত করল। বোখারা দেশ রুশ সভার (সভিয়েটের) অন্তর্ভুক্ত হল।

 কিন্তু মামুদ এবং তার সহকর্মীদের মনে শান্তি ছিল না। কাজ করার সংগে সংগে কুটনৈতিক সাম্রাজ্যবাদীদের আসন্ন চক্রান্তের ভয়ও তাদের মনে জাগরূক হচ্ছিল।

 এদিকে আর এক ঘটনা ঘটবার সময় এসেছিল। বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা অনোয়ার পাশাকে বোখার স্টেট আক্রমণে তৈরী করেছিল। গেল ইস‍্লাম, গেল তুরুক জাত এই বুলি প্রচারিত হচ্ছিল। বোখারা স্টেটের ভেতরে যারা