পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

মনকে কেন্দ্র করেই জীবনে তারা বেঁচে নেই, একটা বড় আদর্শে প্রাণপত দেহগত স্বার্থকে ছাড়িয়ে উঠতে আসলে তারাই পেরেছে।

 যখন আমার শৈশবের সঙ্গিনীটি আমাকে নিয়ে এত দুঃখ পেল তখন আমি আর একজনকে সদ্য হারাবার ব্যথায় মুহ্যমান, মন প্রাণ দেহ আমার সে ব্যথায় মূক ও আড়ষ্ট হয়ে আছে। উপর্য্যুপরি দুটো আঘাত এসে এক হপ্তার মধ্যেই দু’টি ভালবাসার বস্তুকে আমার জীবন থেকে সরিয়ে নিয়ে গেল। আমার বাল্য সঙ্গিনীর জীবনে তখন নতুন মানুষ তার পূজা উপচার নিয়ে মুগ্ধ অনুরাগে সবে ঢুকছে। এই অবস্থায় একটা সকাল বেলার তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে দু’জনে পেলুম নিষ্ঠুর আঘাত। আমার বোধ হয় কতকগুলো আড়ষ্ট কৃত্রিম মন গড়া ব্যবধান কষ্ট করে সেই কাঁটার বেড়ায় ঘা খেয়ে খেয়ে আমরা যতখানি ক্ষতবিক্ষত হই তার সবটুকু মানুষের কল্যাণের জন্যে অপরিহার্য্য নয়। মা বাপের কুল বড়, মান বড়, অর্থলিপ্সা বড়, মতামতের জিদ বড়, না কন্যার হৃদয়ের পরিপূর্ণ আনন্দ বড়? বাধা না পেলে যে প্রেম হয়তো সহজে ফেটে যেতে পারে বা অমূল্য চরিতার্থতা পেয়ে সারা জীবন স্থায়ী হতে পারে, আঘাত ও নির্য্যাতনে তা ফাটতেও পায় না, ফুটতেও পায় না, কাঁটা হয়ে শুধু রক্তপাত ঘটায় আর দেহ প্রাণের স্নায়ুকে আঘাতে আঘাতে ছিঁড়তে থাকে। কত যে হিষ্টিরিয়া, অপমৃত্যু, ব্যাধি, উন্মাদ রোগ ও স্নায়বিক পক্ষাঘাত তরুণদের জীবনে আসে জেদী মা

১৪১