পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

লেখা খেলো বই কখন কেউ দেখেছে বা বিক্রী হয়েছে বলে মনে হয় না। এই সময়টা কলকেতায় আমার বড় দুঃস্থ অবস্থায় কাটে। অর্থোপার্জ্জনের কোন উপায় নেই, সংস্থান নেই, সে রকম কোন শিক্ষা দীক্ষাও নেই; খবরের কাগজে wanted columnএ চাকরী খালি দেখে দরখাস্ত করছি আর মেসের ভাত খাচ্ছি। দু তিন মাসের টাকা মেসে দেনা জমে গেল, ম্যানেজার মুখ অন্ধকার করে তাগাদা জানাতে লাগলেন। কোন উপায় না দেখে আমি গেলুম উডল্যাণ্ড্‌সে কুচবিহারে রাজবাড়ীতে রড়দা’র কাছে। বড়দা আমার দুঃস্থ অবস্থার কথা শুনে বললেন, “আচ্ছা, অমুক দিন আসিস্, যা পারি দেব।” সেই ক’দিন ম্যানেজারের সামনে না পড়ে দিন কাটানো ভার হয়ে উঠলো, নীচে চায়ের দোকানে চা খাওয়া আর রাস্তায় রাস্তায় ঘোরা ছাড়া উপায়ান্তর রইল না। নির্দ্দিষ্ট দিনে ভোর আটটায় গিয়ে দেখি দাদা ঘুমচ্ছেন, আমাকে দেখে বালিসের তলায় হাত দিয়ে ত্রিশ না চল্লিশ টাকার নোট বার করে দিলেন, বললেন, “এখন এই নে, তারপরে আবার দেব।” আমায় রাজ পরিবারের টেবিলে খেতে বললেন, লাজুক আমি তাঁর ঘরে বসেই একটা অমলেট আর রুটি মাখন খেয়ে নিলুম। এই সময় মনে আছে আলিপুরের ব্রীজের কাছ থেকে একটা জসকালো ফিটন গাড়ী ভাড়া করে তাই হাঁকিয়ে ষ্টাইলের উপর গিয়ে দাঁড়াতুম রাজপ্রাসাদের গাড়ী বারাণ্ডায়, তাই দেখে চাপরাস বাঁধা দরোয়ান ও বয়রা ছুটে আসতো এবং খুব খাতির

১৪৭