পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

উজ্জ্বল ভাস্বর চূড়ার পর চূড়া; মনের উপরে স্তরে স্তরে কতই না চেতনার ভূমি উঠে গেছে ধ্রুব থেকে ধ্রুবতর আলোর এবং জ্ঞানের জগতে—অর্দ্ধজ্ঞানে অর্দ্ধ অজ্ঞানে আলো আঁধারী এই বস্তুতন্ত্র মন যার ছায়া যাত্র। নীচের দিকেও তাই অবচেতনার মাঝে ঘুমের স্বপ্নের instinctএর কত না আবরণে মোড়া ঘুমন্ত জ্ঞানস্তর সব রয়েছে যার মাঝে হাতড়ালে ভূত ভবিষ্যৎ বর্ত্তমানের সব কিছু হারাণো ঘটনা এবং তার নিখিল রহস্য-পেটিকা খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। এই সব গুপ্ত জ্ঞানের কোন্ ভূমি থেকে বিদ্যুৎ চম্‌কালো—কোন্ অতিমানস বা অবমানস লোক থেকে বেতারা সংবাদ মনের যন্ত্রে এসে বেজে উঠলো তা বলা অনেকখানিই জ্ঞানের অপেক্ষা রাখে, স্থূলবুদ্ধি অন্ধ মানুষই নিজের মনের বা প্রাণের আকাঙ্ক্ষার সুরে মুগ্ধ হয়ে তার নাম দেয় ভূত, মিরাকল ইত্যাদি।

 নিত্য এই ভূতলোকের অস্ত্যেষ্টিক্রিয়া করা ছাড়া আমার আর এর কাজ ছিল—ভাঙা এস্রাজটিকে আমার কোন গতিকে চলনসই গোছের সুর বেঁধে নিয়ে মাঝে মাঝে বাজাতে বসা। ঢাকায় থাকতে মেজবৌদির বাজনা শেখাবার ওস্তাদ বিখ্যাত ভগবান সেতারীর কাছে আমার যৎসামান্য শেখা বিদ্যাটুকুই এই নিত্য ভাবে উদ্বেগ প্রাণের ছিল একটা মস্ত বড় safety valve। জোয়ার-ভাঁটায় সমুদ্রের কাছাকাছি নদীগুলির অবস্থার মত অনন্তের সঙ্গে যুক্ত আমাদের এই মন প্রাণ হৃদয়ে দিনে রাতে কত না সুখ দুঃখ আনন্দ নিরানন্দের জোয়ার এবং ভাটার

১৭৭