পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

 তার ট্যারা ব্যাঁকা বাঙলা উচ্চারণ দিয়ে এই ইহুদী যুবক যখন গান ছাড়তো,

ও আমার সাধের বকুল ফুল!
স্নানের ঘাটে নাইতে গিয়ে
হারালেম দুকুল।

তখন আড্ডায় আমাদের হাসির দমকা হাওয়া বয়ে যেত। বাইরের ঘরে একটা ক্যাম্প খাটে মাঝে মাঝে রাত্রে এসে শুয়ে থাকতো, কখনও বা ড্রইংরুমে বা পাশের ঘরে সেই খাটটা টেনে নিয়ে রাত কাটিয়ে দিত। তাসখেলায় সে প্রায়ই হারতো আর হারলেই বুক চাপড়ে নেচে কুঁদে পাছা থাবড়ে নানা রকম দুঃখের সং দিয়ে আমাদের হাসাতো। আমার দিদির ও মায়ের এই আমুদে ছেলেটি ছিল ব্যাঙখোঁচানী করে আনন্দ পাবার জিনিস। কলকেতার সহর ছিল তার নখদর্পণে, তাই গোমস্ লেনের সংসারে কোন দুর্ল্লভ দুষ্প্রাপ্য বস্তুর দরকার হলে সে কলকেতা সহর ঘুটে তা’ নিয়ে আসতো।

 আগেই বলেছি দারোয়ান রামরাজ তেওয়ারী ছিল খুব পাকা লাঠি খেলোয়াড়। একদিন গোমস্ লেনের পাড়ার মুসলমান ছেলেদের একটা বল এসে বাড়ীর মধ্যে পড়ে, আমি সেটা কুড়িয়ে নিই। সেই নিয়ে দারোয়ানের সঙ্গে ছোঁড়াদের বচসা হওয়ার পর প্রায় দু’ তিন শ’ মুসলমান এসে আমাদের বাড়ী ঘেরাও করে। রামরাজ দেখি হঠাৎ ফটক একেবারে হাঁ করে খুলে দিয়ে তার পাকা বাঁশের তারের গাঁটবাধা তেল

৫৩