পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

বাবার খুব প্রিয়পাত্রী ছিলেন। তিনি তখন দুই তিন ছেলের মা, বাবা দেখেছি তাঁকেও কোলে করে ছোট মেয়েটির মত আদর করতেন। আন্দামান থেকে ফিরেও এ শ্যামবর্ণ শান্ত প্রকৃতি গোলাপ দিদির সঙ্গে আমি দেখা করেছি, তাঁর মুখে ছিল একটি অনুপম শ্রী, সুন্দরী না হ’লেও যা’ মানুষকে মুগ্ধ করতো।

 রাঙা মা আমাদের নিয়ে পিসীর বাড়ী যেতেন, তাঁরাও মাঝে মাঝে তত্ত্ব তালাস নিতেন, আসতেন-যেতেন। একবার বাবা দিনকতকের জন্যে দেশভ্রমণে যান— কাশী, এলাহাবাদ, জব্বলপুর ইত্যাদি। ছেলেপুলেদের বাবা জিজ্ঞেস করলেন “কে আমার সঙ্গে যাবে বল?” আমি তখনই রাজী হই, শেষটা বাবা, একজন চাকর ও আমি যাত্রা করলুম। সে ভ্রমণের কথা অতি ক্ষীণ অস্পষ্ট ছবির মত আমার মনে আছে। রাঙামা আমায় কতকগুলি গান শিখিয়েছিলেন, তার মধ্যে কৃষ্ণ বিষয়ে এই গানটী গেয়ে কাশীতে আমার অতি বৃদ্ধা ঠাকুরমাকে কাঁদিয়ে দিয়েছিলুম বলে আমার মনে আছে,

“আর তো ব্রজে যাব না রে ভাই,
যেতে প্রাণ নাহি চায়;
ব্রজের খেলা ফুরিয়ে গেছে,
তাই এসেছি মথুরায়।
মা ছেড়েছি, বাপ ছেড়েছি,
ব্রজের খেলা ভুলে গেছি,

৭২