পাতা:আমার বাল্যকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গিরীন্দ্রনাথ ঠাকুর (মেজকাকা)

 মেজকাকা মহাশয় সুরসিক, অমায়িক সৌখীন পুরুষ ছিলেন। যেন বিলাসিতা মূর্তিমান। তাঁর সখের বাগানটি ফলে, ফুলে সুশোভিত—আঙ্গুর, বাতাবী নেবু, পীচ প্রভৃতি বাছা বাছা ফল, আর চম্পা, চামেলী, মালতী, বেল, জুঁই, রজনীগন্ধা, গোলাপ, বকুল কত রকম সুগন্ধ ফুলের গাছ। একটি ছোট জাতের জুঁই ফুলের ব্যাড়া ছিল, রোজ বিকেলবেলা সেই সব জুঁই ফুল আমরা রাশি রাশি কুড়িয়ে আনতুম। যেমন কলাবিদ্যার প্রতি তেমনি বিজ্ঞানের দিকেও তাঁর আন্তরিক অনুরাগ ছিল। তিনি অনেক সময় বৈজ্ঞানিক Experiments নিয়ে আমোদ করতেন ও আমাদের ডেকে আমোদ দিতেন। রাসায়নিক বৈদ্যুতিক ক্রিয়ার প্রদর্শনের মধ্যে যা মনে আছে তা হচ্ছে Galvanic Battery-র প্রয়োগ, তাড়িতপ্রবাহযোগে আমার যে সর্বাঙ্গ কম্পমান হত সে সহজে ভোলবার নয়। সে সব বৈজ্ঞানিক ভেল্কীবাজীতে আমাদের খুবই আমোদ হত। যেমন বিজ্ঞানে তেমনি সাহিত্যক্ষেত্রেও মেজকাকার গতিবিধি ছিল। তিনি যে কতকগুলি সঙ্গীত রচনা করেছিলেন তার মধ্যে একটি শিখেছিলুম—সে এই:—

ললিত

দুখে গেল সুখনিশি প্রাণনাথ কৈ এল
সুখের শয়ন আজু নয়নজলে ভেসে গেল।
আকাশেরি শোভা তারা, আকাশে মিশাল তারা,
রমণীর দুখতারা সুখতারা প্রকাশিল।

 মেজকাকা “বাবুবিলাস” নামে একটি নাটক রচনা করেছিলেন, একবার তার অভিনয় হয়েছিল। তাঁর মোসাহেবের মধ্যে দীননাথ