পাতা:উপদেশ (প্রতাপচন্দ্র মজুমদার).djvu/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইহকাল ও পরকাল । * রবিবার, ১৩ই আষাঢ়, ১৭৯২ শক; ২৬শে জুন, ১৮৭০ খৃষ্টাব্দ। একদিকে ইহকাল, অপর দিকে পরকাল, মধ্যে মৃত্যু দণ্ডায়মান। একদিকে পৃথিবী, অন্যদিকে অনন্তলোক রহিয়াছে, মধ্যে মৃত্যুর সাগর প্রসারিত। কোথায় এই জীবন, কোথায় সেই পরকাল ; কোথায় এখানকার ভাব, আর কোথায় সেইখানকার ভাব! যে দিকে দৃষ্টি করি, কি শোভা পৃথিবী ধারণ করিয়াছে! কি শোভা উদ্যান, পুষ্প, বৃক্ষ, নদ, নদী, জীব জন্তুর | শুভ্র উষার বিশুদ্ধ বায়ুহিল্লোল, সন্ধ্যাকালের হেমবৰ্ণ মেঘমালা ; দ্বিপ্রহর দিবার প্রচণ্ড জ্যোতিঃ, নিশীথ সময়ের গম্ভীর শান্তি ; যে দিকে দেখি, অনুপম পরিচ্ছদে জগত বিভূষিত রহিয়াছে! দর্শন করিয়া কবির নয়ন পরিশ্রান্ত হইল না। জড়জগতের ত এই শোভা, জীব জন্তুর ত এই সৌন্দৰ্য্য ; মনুষ্য পরিবারের আবার কি নূতন সৌন্দৰ্য্য! সন্তানের ভক্তি, স্বামী স্ত্রীর প্রণয়, বন্ধুতা, হিতৈষণ, মাতা পিতার স্নেহ, কত প্রকারে মানবসমাজকে স্থশোভিত করিয়াছে। জ্ঞানের উন্নতি, উন্নতি, বিধিমতে মনুষ্যের সুখ সম্পদ বৃদ্ধি করিতেছে। এতদিন পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়াছি, অদ্যাবধি ইহা পুরাতন হইল না। প্রতিদিন নুতন শিক্ষালাভ করিতেছি, নুতন মুখ ভোগ করিতেছি, নূতন প্রেমরজ্জতে বদ্ধ হইতেছি । জগতের চারিদিকের শোভা ও শান্তিমুখের হিল্লোল মধ্যে বোধ হয় যেন শোক, মৃত্যু এখানে অবস্থিতি করে না। এমন সুন্দর পরমেশ্বরের পৃথিবী এই, ইহার মধ্যে আবার ইহকাল আর পরকাল কি ?

  • ভারতবর্ষীয় ব্রহ্মমন্দির।