পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছোট্ট রামায়ণ
৭৫৩

কাঁধে করে গেল পরে দুজনেরে লয়ে।
সুগ্রীব রামের কাছে জোড়হাতে কয়,
“দয়া করে মোর মিতা হও মহাশয়।
কত দুঃখ দিয়া বালী দিল তাড়াইয়া
রাজা কর মোরে রাম তাহারে মারিয়া।”
শ্রীরাম কহেন তারে, ‘‘আমি তাই চাই,
হইতে তোমার মিতা এনু এই ঠাঁই।
বালীরে মারিয়া রাজা করিব তোমায়,
দয়া করে দাও মিতা খুঁজিয়া সীতায়।”
সুগ্রীব কহিল, “মিতা, নাহি কোনো ভয়
সীতারে খুঁজিয়া মোরা আনিব নিশ্চয়।
সেদিন রাবণ গেল এইখান দিয়া,
দেবতার মতো এক মেয়েকে লইয়া।
কেঁদেছিল সেই কন্যা তোমাদের ডাকি,
সকলে শুনিলু মোরা এইখানে থাকি।
ফেলি গেল অলংকার মোদের দেখিয়া
যতন করিয়া তাহা দিয়াছি রাখিয়া।”
কতই কাঁদেন রাম দেখে অলংকার,
“সীতা, সীতা” বলে বুক ফাটে যেন তাঁর
সুগ্রীব কহিল তাঁরে, “কাঁদিয়ো না মিতা,
নিশ্চয় কহিনু মোরা এনে দিব সীতা।”
তখন রামের বড় সুখ হল মনে,
হাসিয়া কহেন কথা সুগ্রীবের সনে।
সুগ্রীব কহিল, “মিতা, বড় ভয় পাই,
বালীর সমান বীর কোথাও যে নাই।
দুন্দুভি দানবে বালী ফেলে দিল ছুঁড়ে,
যোজন দূরেতে এসে পড়িল সে উড়ে।
ঐ দেখ পড়ে সেই দুন্দুভির হাড়,
দেখ, তায় কত বড় হয়েছে পাহাড়।
হেসে বালী শালগাছ ফোঁড়ে শূল দিয়া,
পর্বতের চুড়া লয়ে খেলে সে লুফিয়া।
দুন্দুভির হাড় তুমি পার কি ছুঁড়িতে?
তীর মারি শালগাছ পার কি ফুঁড়িতে?”
পায়ের আঙুলে রাম সেই হাড় ঠেলে,
দিলেন যোজন দশ দূরে তাহা ফেলে।
গাঁথা গেল সাত শাল তাঁর এক তীরে,

উপেন্দ্র-৯৫