পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৮২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
সেকালের কথা
৮২৭

ম্যামথ যে মানুষের সময় পর্যন্ত বাঁচিয়াছিল, তাহাতে আর কোন ভুল নাই। প্রাচীনকালের মানুষ আর ম্যামথের চিহ্ন একত্রে পাওয়া যায়। ম্যামথের দাঁতে প্রাচীনকালের চিত্রকর ম্যামথের ছবি আঁকিয়াছিল; সেই ছবিসুদ্ধ সেই দাঁত পাওয়া গিয়াছে। আমরা এই আশ্চর্য ছবির নমুনা দিলাম। ইহা অপেক্ষা পুরাতন ছবি পৃথিবীতে নাই। তখনকার ডাইনোথরিয়ম মানুষ ধাতুর জিনিস প্রস্তুত করিতে সর্বাপেক্ষা প্রাচীন হস্তী জানিত না; পাথরের কুচি দিয়া অস্ত্রের কাজ চালাইত। বোধহয় ঐ পাথরের কুচির আঁচড় দিয়াই এই ছবিটি আঁকিয়াছিল। এমত অবস্থায় ছবিটি এমন মন্দই বা কি হইয়াছে! আর, ভাল হউক আর মন্দ হউক, উহা তো ম্যামথেরই চেহারা। চিত্রকর ম্যামথ না দেখিয়া কখনই তাহা আঁকিতে পারে নাই, এ কথা নিশ্চয়। আমাদের দেশে অনেক প্রকারের হাতি ছিল, তাহার একটির নাম টিগোডন গণেশ। এই হাতির একটি মাথা পাওয়া গিয়াছে, তাহা দাতসুদ্ধ চৌদ্দ ফুট লম্বা। এক একটি দাঁত সাড়ে দশ ফুট লম্বা। আর একটি জন্তু আমাদের দেশে ছিল, তাহার নাম শিবথীরিয়ম্ (শিবের জন্তু)। এই জন্তু হরিণ আর জিরাফের মাঝামাঝি। ইহার চারিটি শিং ছিল। আকৃতি গণ্ডার অপেক্ষাও বড়। আমাদের দেশে একপ্রকারের অতি বৃহৎ কচ্ছপ ছিল; তাহার একটা ভোলা তোমাদের অনেকেই কলিকাতার জাদুঘরে দেখিয়া থাকিবে। এই খোলা দশ ফুট লম্বা আর তাহার উপযুক্তরূপ উঁচু এবং চওড়া। ইহার ভিতরে তিন-চারিজন লোক অনায়াসে ঢুকিয়া থাকিতে পারে। পুরাতন ভ্রমণবৃত্তান্তের পুস্তকে এমন একটা দেশের উল্লেখ দেখা যায় যে, সেখানকার লোকেরা এক একখানা আক্ত কচ্ছপের খোলা দিয়া ঘরের চাল প্রস্তুত করিত। এ সকল গল্প সত্য কি মিথ্যা বলিতে পারি না। কিন্তু জাদুঘরের ঐ কচ্ছপের খোলাটা দিয়া সন্ন্যাসী-গোছের একজন লোক থাকিবার মন একটা ঘরের চাল অনায়াসে হইতে পারে। দেরাদুনের নিকট শিবলিক ম্যাগ্রোভন পর্বতে এইসকল জন্তুর হাড় পাওয়া গরি দাতওয়ালা সেকালের হতি গিয়াছে। নর্মদা নদীর ধারেও