পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৯০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯০৬
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

রোগী ছিলেন; তারপর নিজের আবিষ্কৃত প্রণালী অনুসারে ব্যায়াম করিয়া অদ্বিতীয় বীর হইয়াছেন। এই প্রণালী অনুসারে নিয়মমত ব্যায়াম করিলে, সকলেই তাঁহার মতন হইতে পারে, এই কথা তিনি স্পষ্টাক্ষরে বলিয়াছেন। স্যাণ্ডো Strength And How to obtain it নামক একখানা পুস্তক লিখিয়াছেন। তাহাতে তাহার জীবন এবং ব্যায়াম প্রণালীর বিবরণ লেখা আছে আমার পরিচিত অনেকেই এই প্রণালীতে ব্যায়াম করিয়া বিশেষ উপকার পাইতেছেন। এই প্রণালীর বিশেষ গুণ এই যে, ইহা অন্য সকল প্রণালী অপেক্ষা সহজ। ইহাতে খাওয়া-দাওয়া সম্বন্ধে কোন আঁটাতাটি নাই; ব্যয় অতি সামান্য; আর খুব শীঘ্র উপকার পাওয়া যায়।

 প্রার্থনা করি, তোমরা স্যাণ্ডোর ন্যায় বলশালী হও, আর স্যাণ্ডোর চাইতে৭সেই বলের অধিকতর সদ্ব্যবহার কর।


বিড়ালের জাত

 আমাদের ঘরের বিড়ালগুলি দেখিতে ছোট বটে, কিন্তু পদে খুব বড়। শুনিয়াছি, বাঘ না কি বিড়ালের বোন-পো হয়।

 সিংহ তাহার কে হয়, তাহা সঠিক বলিতে পারি না। তবে পণ্ডিতেরা বলেন যে, সেও না কি বিড়ালেরই জাত-ভাই।

 সিংহ পশুর রাজা, একথা অনেকবার পুস্তকে পড়িয়াছি। কে তাহাকে রাজা করিল;কি দেখিয়া করিল,কোন বিশেষ গুণে, না কি খালি দাড়ি-গোঁফের জোরে—এ সকল কথার পরিষ্কার উত্তর এখন খুজিয়া পাওয়া কঠিন হইবে। তবে এইমাত্র বলিতে পারি, যে সকল দেশেই তাহকে পশুর রাজা বলে।

 দেখিতে খুব জমকালো তাহাতে সন্দেহ নাই। মুখ ভার করিয়া দাড়াইলে, নেহাৎ কেওকেটা বলিয়া উড়াইয়া দিতে ভরসা হয় না। কিন্তু গায়ের জোরে সে বাঘের চাইতে বড় কি না, তাহা সন্দেহের বিষয়। বাঘে সিংহে লড়াই দেখা গিয়াছে—দুবারই কিন্তু পোষা বাঘ আর পোষা সিংহে। একবার বিলাতে এইরূপ লড়াই হয়, তাহতে সিংহটা জিতে; আর একবার কলিকাতায় এইরূপ হয়; তাহাতে বাঘটা জিতে। সুতরাং জয়-পরাজয় কাহারও হয় নাই বলিতে হয়।

 শুনিয়াছি, সিংহের মেজাজটা না কি খুব রাজার মতন। কিন্তু ইহার অর্থ কি বুঝিব, জানি না। অনেকগুলি রাজার কথা শুনিলে তাহাদিগকে খুব ছোট লোক বলিয়াই মনে হয়। তাহ ছাড়া সিংহের বিরুদ্ধে আজকাল এ বিষয়ে ঢের কথা শুনিতে পাওয়া যায়;তাহার সকল কথা সত্য হইলে, লজ্জার বিষয় বলিতে হইবে। সাহসের কথা যদি বল, তবে সিংহ এ বিষয়েও খুব প্রশংসার পাত্র নহে। শিকারীর সামনে পড়িলে, অন্য দশটা জানোয়ারের ন্যায় সেও চম্পট দিতে কুষ্ঠিত হয় না। অনেক বড় বড় শিকারীর মুখে শুনা গিয়াছে যে সিংহের ব্যবহার মোটের উপরে অনেকটা কাপুরুষেরই মতন। বিদঘুটে ভেংচি দেখিয়া, আর বিকট চীৎকার শুনিয়া সিংহকে ভয় পাইতে দেখা গিয়াছে। তবে একথা শুনিয়াছি, যে একবার ক্ষেপিয়া দাঁড়াইলে, সিংহ কিছুতেই ভয় পায় না।