পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
দারোগার দপ্তর, ১৬০ সংখ্যা।

রহিল না। তিনি আমায় কহিলেন,—“দেখ, তুমি একজন এই বিভাগের যুবা কর্ম্মচারী। তোমার কার্য্যকলাপ দেখিয়া আমার মনে তোমার উপর অনেক আশা জন্মিয়াছে। এ কার্য্যে দুই একবার বিফল হইলে নিরুৎসাহ হইতে নাই। তুমি যত বিফল হইবে, ততই যেন তোমার উৎসাহ বাড়িতে থাকিবে, ততই এ কার্য্যে জেদ হইবে, তবে তুমি উন্নতি করিতে পারিবে। তুমি এই খুনের সম্বন্ধে যে মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছ, আমিও তাহা সম্পূর্ণ অনুমোদন করি। তোমার মনের সহিত আমারও মত ঠিক্ মিলিয়াছে বলিয়া আমি তোমার উপর এই কার্য্যের ভার দিয়াছি। অনেক পুরাতন ও বহুদর্শী কর্ম্মচারী সেই কারণ আমার উপর মনে মনে বিরক্ত হইয়াছে। এখনও অনুসন্ধানের অনেক বাকি আছে; তুমি ইহারই মধ্যে নিরুৎসাহ হইলে চলিবে কেন?”

 খোদ বড় সাহেবের মুখে উপরোক্ত কথাগুলি শুনিয়া আমার মনে মনে বড় আহ্লাদ হইল এবং সে উৎসাহও যেন দ্বিগুণ হইয়া ফিরিয়া আসিল। আমি কহিলাম, “আমার প্রতি হুজুরের যখন এত অনুগ্রহ হইয়াছে, তখন আর আমি এ কার্য্যে নিরুৎসাহ হইব না। আসামীকে আমি সেই ঘটনার দিন মাত্র দেখিয়াছিলাম, তার পর আর দেখি নাই। আসামী নিজে তাহার কি পরিচয় দিয়াছে, সে কি সূত্রে সে রাত্রে সে বাড়ীতে আসিল; আর সে যদি খুন না করিয়া থাকে, তবে কে খুন করিল—সেই বা পিস্তল হাতে করিয়া খিড়কীর দরজায় দাঁড়াইয়াছিল কেন—এই সকল বিষয় সম্বন্ধে সে কি এজেহার দিয়াছে, সেই এজাহার দেখিলে আমি পুনরায় দ্বিগুণ উৎসাহে তাহার অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইতে পারি।”