পাতা:কথা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
কথা

রাখাল লুকায়ে মুখ কাঁপিছে নীরবে।
তখন বিপন্ন মাঝি ডাকি কহে সবে-
“বাবারে দিয়েছে ফাঁকি তােমাদের কেউ,
যা মেনেছে দেয় নাই তাই এত ঢেউ,
অসময়ে এ তুফান! শুন এই বেলা,
করহ মানৎ রক্ষা—করিয়ো না খেলা,
ক্রুদ্ধ দেবতার সনে।”- যার যত ছিল
অর্থ বস্ত্র যাহা কিছু জলে ফেলি দিল
না করি বিচার। তবু তখনি পলকে
তরীতে উঠিল জল দারুণ ঝলকে।
মাঝি কহে পুনর্ব্বার-“দেবতার ধন
কে যায় ফিরায়ে লয়ে এই বেল শােন্।”
ব্রাহ্মণ সহসা উঠি কহিল। তখনি
মােক্ষদারে লক্ষ্য করি—“এই সে রমণী
দেবতারে সঁপি দিয়া আপনার ছেলে
চুরি করে নিয়ে যায়!”—“দাও তারে ফেলে”
একবাক্যে গর্জ্জি উঠে তরাসে নিষ্ঠুর
যাত্রী সবে। কহে নারী “হে দাদাঠাকুর
রক্ষা কর, রক্ষা কর।” দুই দৃঢ় করে
রাখালের প্রাণপণে বক্ষে চাপি ধরে।


ভৎসিয়া গর্জ্জিয়া উঠি কহিলা ব্রাহ্মণ
“আমি তাের রক্ষাকর্তা! রোষে নিশ্চেতন