পাতা:কথা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কথা
৩৩

অযাচিত অনুগ্রহ,—চলেছি সম্প্রতি
রাজকাজে,—সুদর্শনে, দেহ অনুমতি!
বজ্রসেন তুলি শির সহসা কহিলা—
একি লীলা, হে সুন্দরী, একি তব লীলা!
পথ হতে ঘরে আনি কিসের কৌতুকে
নির্দ্দোষী এ প্রবাসীর অবমানদুখে
করিতেছ অবমান।—শুনি শ্যামা কহে,
হায় গাে বিদেশী পান্থ কৌতুক এ নহে।
আমার অঙ্গেতে যত স্বর্ণ অলঙ্কার
সমস্ত সঁপিয়া দিয়া শৃঙ্খল তােমার
নিতে পারি নিজ দেহে; তব অপমানে
মাের অন্তরাত্মা আজি অপমান মানে।
এত বলি সিক্তপক্ষ দুটি চক্ষু দিয়া
সমস্ত লাঞ্ছনা যেন লইল মুছিয়া
বিদেশীর অঙ্গ হতে। কহিল রক্ষীরে
আমার যা আছে লয়ে নির্দ্দোষী বন্দীরে
মুক্ত করে দিয়ে যাও।—কহিল প্রহরী
তব অনুনয় আজি ঠেলিনু সুন্দরী
এত এ অসাধ্য কাজ। হৃত রাজকোষ,
বিনা কারাে প্রাণপাতে নৃপতির রােষ
শান্তি মানিবে না।—ধরি প্রহরীর হাত
কাতরে কহিল শ্যামা,—শুধু দুটি রাত
বন্দীরে বাঁচায়ে রেখো এ মিনতি করি!-
রাখিব তােমার কথা,কহিল প্রহরী।