পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাণ্ডুবৰ্ণে পরিণত হইল। চোখের কোলে কালিমা প্ৰকাশ পাইল । তাহার যে সুকুমার দেহখানি যেন অনস্থিরচিতাবৎ প্ৰতীত হইত, তাহারও স্থানে স্থানে অস্থি জাগিতে লাগিল। বসিলে, সে আর সহসা ' উঠিতে পারে না, একবার সিড়িতে উঠিলেই হাঁপাইতে থাকে, যে কাজ করিতে বসে, বহুক্ষণ তাহা লইয়াই বসিয়া থাকে, যে দিকে চাহে, অনেকক্ষণ সেই দিকেই চাহিব্রুয়া থাকে, সব কথা একবারে বুঝিয়া উঠিতে পারে না, যেন কেমন একতর হইয়া পড়িল । কমলার স্বাস্থ্যভঙ্গের লক্ষণে ভয় পাইয়া নীরদ কৃষ্ণনাথকে তাহা বলিল। করুণা মুখটি শুকাইয়া আসিয়া তঁহাকে ডাক্তার আনিবার জন্য অনুরোধ করিল। তিনি বিষন্নমুখে একটু হাসিয়া একটা দীর্ঘশ্বাস, ত্যাগ করিয়া হেমন্তকে ডাক্তার ডাকিতে বলিলেন । , ডাক্তার আসিয়া দীর্ঘ ব্যবস্থাপত্ৰ লিখিয়া বলকারক ঔষধের ব্যবস্থা করিলেন। ঔষধসেবনে কমলার প্রবৃত্তি নাই ; তবে না খাইলে করুণা কাদে, কৃষ্ণনাথ ও হেমন্তের মুখ বিষন্ন হয়, নীরদ বকে, সুতরাং ঔষধ খাইতে হয়। কিন্তু তাহাতে কোন উপকার নাই। হৃদয়ের ব্যাধি কাহার কবে ঔষধে উপশান্ত হইয়াছে ? করুণা একদিন কঁাদ কঁাদ হইয়া কমলাকে জিজ্ঞাসা করিল, “কেন তুমি এমন হ’য়ে যােচ্ছ, দিদি ? তোমার কি কষ্ট হ’চ্ছে ব’লবে না ?” কমলা মৃদু হাসিয়া বলিল, “আমার কোন কষ্ট নেই, বোন, আমি বেশ আছি; শুধু তোরা সবাই আমার জন্যে এতটা উতলা হ’স নি।” নীরদ একদিন কথায় কথায় বলিল, “ছিঃ ! তার প্রাণ কিন্তু বড় কঠিন, বোন!” [ ২১৭