পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমলা সুধাংশুর জলযোগ শেষ হইলে, তাহার নিকটে পাণের ডিপেট খুলিয়া রাখিয়া, কমলা একটু হাসিয়া বলিল, “আর একদিন পাণ নিতে এসে তুমি আমার কাছে কি সত্যি ক’রে রেখেছ মনে আছে ?” সুধাংশু পাণ মুখে দিয়া চিবাইতে চিবাইতে বলিল, “কি সত্যি, বউদিদি?” কমলা। J আমি বললেই তুমি কি ক’রবে ব’লেছেলে মনে নেই ? সুধাংশু একটু হাসিয়া নতমুখে বলিল, “ও -সেই কথা ?--তা, সেই দিনই আসুক !” কমলা । আমি যদি সেই দিন অবধি নাই থাকি ? সুধাংশু। তুমি না থাকলে সে দিন আসবার দরকারও হবে না। কমলা। না-বল যে, তোমার দাদা অনুরোধ করলে তঁর অবাধ্য হবে না ! সুধাংশু । সেকথা এখন কেন, বউদিদি ?—এখনসুধাংশু কথাটা শেষ করিতে পাইল না। হেমন্ত আসিয়া তাহাকে ভাত খাইবার জন্য ডাকিয়া লইয়া গেল। আহারান্তে সুধাংশু কৃষ্ণনাথের নিকটে বসিয়া কথাবাৰ্ত্ত কহিতে কহিতে কমলাকে গৃহে লইয়া যাইবার প্রস্তাব করিলে, তাহ শুনিয়া তিনি শিহরিয়া উঠিলেন ; কে যেন অকস্মাৎ তঁহার পৃষ্ঠে কশাঘাত করিল। কমলা যে তঁহার নহে, সে যে একদিন তাহার আত্মীয়গণের নিকটে চলিয়া যাইবে তাহা তিনি জানিতেন--তিনি নিজেই তাহার স্বামীর অন্বেষণ করিতেছিলেন ; তবে তঁহার এ ব্যামোহ কি জন্য ? হায় মানবপ্রকৃতি ! যাহা আমাদের নহে। এমন কত জিনিসকেই আমরা আমাদের ভাবিয়া আগুলিয়া রাখিতে যত্ন করি এবং থাকিবার নহে জানিয়াও তাহাদের চলিয়া যাইবার নামে এমনি করিয়াই শিহরিয়া উঠি ! [ ૨૧