পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/২৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

काव् সত্যি হয় তা হ’লে আপনি সমাজের চক্ষে নিন্দনীয় হ’য়েছেন, আর ধৰ্ম্মের কাছেও অপরাধী হ’য়েছেন। সে জন্যে যদি সত্যিই কা’রও ক্ষমা দরকার মনে ক’রে থাকেন, তা হ’লে সবার সব অপরাধের যিনি দণ্ডবিধাতা আর মার্জনাকৰ্ত্তা তারই কাছে ক্ষমা ভিক্ষা ক’রবেন। -তেমন কেউ যে আছেন তা বিশ্বাস করেন। ত ?” হরিকুমারের মুখ গম্ভীর হইয়া উঠিল। অবনতমস্তকে একটু চুপ করিয়া বসিয়া থাকিয়া সে অনুচ্চকণ্ঠে বলিল, “পাপের আনন্দেই চিরদিন মগ্ন থাকতাম, তেমন কারও কথা মনে করবার কখন অবসর হয় নি,”- মনে করা যে দরকার তাও কখন মনে হয় নি। কিন্তু তেমন কেউ যে নেই তা কি ক’রে বলব ?”—তারপর একটু থামির বিরাজের মুখের দিকে চাহিয়া দৃঢ়স্বরে বলিল,—“চক্ষুষ্মান কে এমন অন্ধ আছে,-চেতন কৈ এমন অচেতন আছে, যে তার অস্তিত্বে অবিশ্বাস করে ?-এ রবি-শশিশোভিত, তরু-গিরিসমন্বিত বিরাট সৃষ্টি কার? -তৃণ অঙ্কুরিত হয়, তরু-লতা পল্পবিত ও’ মুকুলিত হয়, ফুল ফোটে, ফল ফলে, মানুষ ঘুমায়-আবার জাগে,-এসব কে করে ?--তেমন যদি কেউ নেই। তবে পাপ কেন পুণ্যকে কলুষিত ক’বুতে পারে না ?-ইরাচার পাষণ্ডের অন্তরেও কেন অনুতাপ উপস্থিত হয় ?” টেণগাড়ীখানা সেই সময়ে একটা বিস্তৃত প্ৰান্তরের উপর দিয়া ছুটিতেছিল। পশ্চিমগগন সুৰ্য্যাস্তের লোহিত রাগে রঞ্জিত হইয়া উঠিয়াছিল। দিগন্তের নীল ও বক্র বনরেখার উপরিভাগে রক্তরবিবিস্ব যেন অস্তগিরিব নালীর ফুল্লমন্দার-স্তবকের ন্যায় শোভা পাইতেছিল। হরকুমার সেই 'জবাকুসুমসঙ্কাশ অস্তমান ভানুর তপ্তকনক-রশ্মিচ্ছটায় দীপিত দিগন্তের পানে অনিমেষনেত্ৰে চাহিয়া কম্পিত্যকণ্ঠে উচ্চৈঃস্বরে বলিল, “বিশ্বাত্মন! তুমি নেই ?-তুমি যদি নেই। তবে এ বিশ্ব-প্ৰপঞ্চ কেন ?—তুমি আছ তাই [ २१>