পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

` එ8 করুণা রক্ষা করিতে হইবে । পুত্ৰগণ । অগ্নি গুপ্তের অনুরোধ, একজন বালীকনগরে ফিরিয়া যাও ” পঞ্চশত অশ্বারোগ পূৰ্ব্বের ন্যায় নিশ্চল হইয়া দাড়াইয়া রহিল। তাহ দেখিয়া বৃদ্ধ মহাবলাধিকৃতের শীর্ণ গণ্ডস্থল বহিয়া স্রোতের ন্তায় অশ্রুধারা প্রবাহিত হইল। গদগদকণ্ঠে বৃদ্ধ পুনরায় কছিলেন, “আৰ্য্য ! তোমার নাম সত্য। তোমার শিক্ষা, তোমার অনুস্থত পথ মগধবাসী এখনও বিস্কৃত হয় নাই। পুত্ৰগণ । যে বয়ঃকনিষ্ঠ, যে অল্পদিন পূৰ্ব্বে বিবাহ করিয়াছে, তাহাকে বাহুলীক নগরে প্রেরণ কর।” একজন গোত্মিক একজন তরুণ অশ্বারোহীকে মহাবলাধিকৃতের সম্মুখে আনিল, অশ্বারোহী অশ্ব ত্যাগ করিয়া বুদ্ধের পদযুগল ধারণ করিয়া রোদন করিতে আরম্ভ করিল। সে কহিল, “পিতা, আমার দেহ মাতৃস্তন্তে পুঃ, পুরুষানুক্রমে গুপ্তবংশের অন্নে পালিত, আমি কোন মুখে বাহুলকনগরে ফিরিয়া যাইব ?” অগ্নিগুপ্ত তাহার মস্তকে হস্তাপণ করিয়া কহিলেন, “পুত্র! সৈনিকের কৰ্ত্তব্য কঠোর। ইহাও কৰ্ত্তব্য, ফিরিয়া যাও। যদি কখনও পাটলিপুত্রে ফিরিয়া যাও, তাহা হইলে কুমারগুপ্তকে বলিও যে, অগ্নিগুপ্ত উত্তরাপথের তোরণ রক্ষা করিয়াছিল ।” অশ্বারোহী বাহুলীক অভিমুখে যাত্রা করিল। অগ্নিগুপ্ত পুনরায় শঙ্খধ্বনি করিলেন—একোনপঞ্চশত অশ্বারোহী বাহুলীকাতীরে ফিরিয়া দাড়াইল এবং বালীকার তুষার-শীতল জলে ঝম্প প্রদান করিল। তখন তৃণসেনা নিকটে আসিয়াছে, মুষ্টিমেয় শক্রসেনা দেখিয়া তাহারা গর্জন করিয়া উঠিল, ভীষণ শব্দে পুনরায় পৰ্ব্বতমালা কম্পিত হইয়া উঠিল। একদিন সেই শব্দে সুদূর প্রতীচ্যে রোমকনগর,কম্পিত হইয়াছিল। পরপারে মাগধ-সেনা শ্রেণীবদ্ধ হইষ্ট সঙ্কীর্ণ পাৰ্ব্বত্যপথ রুদ্ধ করিল, সে পথে পঞ্চজনের অধিক অশ্বারোহী এককালে চলা কঠিন। দেখিতে দেখিতে ঝঞ্চাপাতের দ্যায় বৰ্ব্বর সেনা সেই কৃষ্ণরেখা আক্রমণ করিল।