পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>Qミ করুণা ছিল। রমণীসুলভ লজ্জা সে বোধ হয় বহুদিন পূৰ্ব্বে পরিত্যাগ করিয়াছে। নিঃসঙ্কোচে অনাবৃত সরোবরঘটায় স্নান করিয়া তরুণী সোপানে দাড়াইয়া বস্ত্র পরিত্যাগ করিল এবং প্রসাধনের দ্রব্যাদি লইয়া কেশ-বিদ্যাসে মনঃসংযোগ করিল। রাত্রি আসিল, অমাবস্তার অন্ধকার রজনীতে অন্ধকার অশোক তরু, তল উচ্চশিখ-হোমানলে উজ্জ্বল হইয়া উঠিল । তীব্র উত্তপ্ত অগ্নিকুণ্ডের পাশ্বে বসিয়া মধুরক্তনেত্ৰ কাপালিক অনবরত মন্ত্র পাঠ করিতেছিল এবং মধ্যে মধ্যে প্লুতসিক্ত রক্তজবা ও বিল্বদল হুতাশন বদনে নিক্ষেপ করিতেছিল । তরুণী প্রসাধন শেষ করিয়া সরোবরের ঘটায় বেদীর উপর বসিয়া তীব্র সুরাপান করিতেছিল, জনৈক পরিচারক তাহার সম্মুখে উজ্জল উল্কাহস্তে দণ্ডায়মান ছিল । সহসা হোমকুণ্ডের পাশ্ব হইতে প্রৌঢ়া ডাকিল, “অনন্ত !” তরুণী কঠিল “যাই ।” তরুণী নিকটে আসিল, কাপালিক আসন ত্যাগ করিয়া দাড়াইল এবং কাচপাত্রে লতাবিশেষের রস লইয়া তাহা মন্ত্রপূত করিল, আসব বিহ্বল তরুণী তাহা একনিশ্বাসে পান করিল। তখন কাপালিক প্রৌঢ়াকে কহিল, “যা, তোর কন্যার অভীষ্ট সিদ্ধ হইবে। এখন হইতে উহার নয়ন বন্ধন করিয়া রাখৃ, যাঙ্গকে তোর কন্যা কামনা করিয়াছে, তাহাকে দেখিতে পাইলে দূর হইতে নয়নের বন্ধন মোচন করিয়া দিপ্‌ ৷” কাপালিক পুনরায় বসিল, হবিল্পর্শে হোমশিখা আবার আকাশে উঠিল, প্রৌঢ়া ক্ষৌমবস্ত্রে তরুণীর নয়নবদ্ধ করিয়া তাহার হস্তধারণ করিয়া হোমকুণ্ডের পাশ্বে উপবেশন করাইল । পুনৰ্ব্বার মন্ত্রপাঠ আরম্ভ হইল, স্কৃতসিক্ত রক্তজবা ও বিল্বদল অনলকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হইতে লাগিল । অৰ্দ্ধদও অতিবাহিত হইল, তখন কাপাদিক পুনরায় আসন ত্যাগ করিল এবং একটি অৰ্দ্ধদগ্ধ রক্তজবা তরুণীর হস্তে দিয়া কহিল, “তুই যাহাকে কামনা করিস, সে তোর নিকটে আসিলে তাহার অঙ্গে এই মন্ত্রপূত পুষ্প