পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ পরিচ্ছেদ ২১৭ বৰ্ব্বররাজ র্তাহার বসনাকর্ষণ করিলেন, অবগুণ্ঠন খুলিয়া গেল, কর্ণা বক্ষের বসন উভর হস্তে দৃঢ়মুষ্টিতে ধরিয়া রছিলেন। স্কুণরাজের পাশ্বে এক নিরস্ত্র হুণবৃদ্ধ দাড়াইয়াছিল, কুণরাজ দ্বিতীয়বার বসনাকর্ষণ করিলে করুণা সহসা উচ্চতাস্ত করিয়া উঠিলেন, তাহা শুনিয়া বৃদ্ধ অগ্রসর হইল । তৃতীয়বার বস্ত্র আকর্নিত তইলে মস্তকের দীর্ঘকেশ আলুলায়িত হইয়া পড়িল, শ্লথমুষ্টিতে ধৃত বসন বক্ষ পরিত্যাগ করিল, সঙ্গে সঙ্গে চারিদিকে অগ্নিশিপা দ্বিগুণ হইয়া উঠিল । দ্বিতীয়বার বিকট হয়ে প্রাচীন পুরুষপুরের ধ্বংসাবশেষ মুখরিত হইয়া উঠিল, হুণরাজ দস্তম্ভিত হইয়া দাড়াইলেন । সহসা উদ্ধদিকে হস্তবিস্তার করিয়া করুণ বলিয়া উঠিলেন, “তুমি, এতক্ষণ তোমার প্রতীক্ষা করিতেছিলাম, আসিয়াছ, চল —মই—” ভীতিত্রস্ত বৰ্ব্বররাজ দশহস্ত দূরে সরিয়া গেল। তখন সেই হণবৃদ্ধ ধীরে ধীরে অগ্রসর হইল, আবার বিকট হাস্তে পুরুষপুরের অঙ্গাররাশি কম্পিত হইল, আবার অগ্নিশিখা দ্বিগুণবেগে গগন স্পর্শ করিল, ভয়ে ও বিস্ময়ে বৃদ্ধ হ্ণ প্রায়বিবসনা তরুণীর পাদমূল্লে লুটাইয়া পড়িল । সহসা হ্ৰণভাষায় উচ্চারিত হইল, “ম৷ ” দূরে নতজানু তূণরাজ ভীতিকম্পিতকণ্ঠে কছিল, “মা,” চারিদিকে হ্রণ প্রধান ও নায়কগণ নতজানু হইয়া মাতৃনাম উচ্চারণ করিল। বৃদ্ধ তৃণ ধীরে ধীরে বক্ষের স্থলিত বসন যথাস্থানে স্থাপন করিল এবং লুণ্ঠনলব্ধ দ্রব্যসম্ভার হইতে বহুমূল্য আস্তরণ লষ্টয়া আসিয়া ভূমিতে বিছাইয়া দিল। মাতৃনাম শ্রবণ করিয়া করুণার নয়নদ্বয়ে রেষদীপ্তবহ্নি ধীরে ধীরে নিৰ্ব্বপিত হইল। করুণা উপবেশন করিলেন । বিদ্যুদ্বেগে বিজয়ী হণসেনার মধ্যে প্রচারিত হইল যে মাতা আসিয়াছেন, দলে দলে হণসৈনিক মাতৃদর্শন করিতে আসিল এবং দূর হইতে দেবী দর্শন করিয়া উচ্চকণ্ঠে উচ্চারিত মাতৃনামে গগন বিদীর্ণ করিল। হতাবশিষ্ট পুরুষপুরবাসী রক্ষা পাইল ।