পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/২৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম পরিচ্ছেদ ૨( 6 প্রৌঢ় গোবিন্দগুপ্ত এক লম্ফে অশ্ব পরিত্যাগ করিয়া ব্যুহের দিকে অগ্রসর হুইলেন এবং শিশুর ন্যায় উভয় বাহু প্রসারণ করিয়া আকুলকণ্ঠে ডাকিলেন, “পুত্র-স্কন্দ-যুবরাজ-” স্কন্দ গুপ্ত বৃঙ্গের সম্মুখে দাড়াইয়াছিলেন, এক হস্তে গরুড়ধ্বজ ও অপর হস্তে কোষমুক্ত অসি লইয়া যুবরাজ অগ্রসর হইলেন। দৃঢ়স্বরে স্কন্দ গুপ্ত জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কুণরাজ-দূত ? বলিও চন্দ্রসেন প্রত্যাবৰ্ত্তন করিয়াছিল কিন্তু আর্য সমুদ্র গুপ্তের রণনীতিতে প্রত্যাবৰ্ত্তন নাই—বলিও স্কন্দগুপ্ত প্রত্যাবৰ্ত্তন করিবে না। ফিরুিয়া যাও যুদ্ধ শেষ চউক—” 参 “পুত্ৰ— আমি—” “কে তুমি ?” ক্ষিপ্ৰহস্তে মহারাজ-পুত্র গোবিন্দগুপ্ত শিরস্কাণ উন্মোচন করিলেন, ততচেতন স্কন্দ গুপ্ত পিতৃব্যের পাদমূলে পতিত হইলেন, আবার সহস্ৰকণ্ঠে যুবরাজভট্টারকের জয়ধ্বনি উচ্চারিত হইল । তখন কৃষ্ণ গুপ্তের সহিত নূতন মাগধসেনা চক্রবৃহের নিকট আসিয়া পড়িয়াছে, তাহারা জয়ধ্বনি শুনিল, আবার লক্ষকণ্ঠে যুবরাজভট্টারকের জয়ধ্বনি উচ্চারিত হইল, শতসহস্র মাগধসেনা কোষমুক্ত অসি শিরস্ত্রাণ স্পর্শ করাইয়া শতদ্রুতীরে প্রথম প্রভাতে হণবিজয়ী দ্বিসহস্র বীরকে অভিবাদন করিল। প্রৌঢ় মহারাজ-পুত্রের শীর্ণ গণ্ডস্থল বহিয়া অশ্রুধারা প্রবাহিত হইল। আবেগরুদ্ধ কণ্ঠে গোবিন্দগুপ্ত বলিয়া উঠিলেন, “কৃষ্ণ, আর্যাবৰ্ত্ত রক্ষিত হইয়াছে, স্কন্দ সত্য সত্যই গুপ্তকুল রবি মাগধ-সেনা পিতামহের রণনীতি বিস্তৃত হয় নাই কিন্তু যাহার জন্ত পঞ্চলক্ষ বীর বাহলীকে, কপিশার, গন্ধারে ও পঞ্চনদে আত্মবিসর্জন দিয়াছে, সে কোথায় ?” কৃষ্ণ গুপ্ত বিষণ্ণবদনে কহিলেন, “পাটলিপুত্রে— প্রমোদ-উদ্যানে ৷”