পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 o করুণ। কহিলেন, “কুমার যখন তোকে বিবাহ করিবেন তখন আমরা আবার দেখিতে পাইব না।” “বাও, তুমি বড় দুষ্ট। দিদি তোমার মন কেমন করে না ?” “কাহার জন্ত ?” “এই আমাদের জন্য ?” “আমাদের কে কে ?” “কেন আমি আর—” , “আর কে ?” “এই মহাদেবী—” “আর ?” “আর আমি জানি না। তুমি আস না কেন বল না ?” “তোর ভগিনীপতি যে ছাড়িয়া দেয় না ভাই।” “থাক তুমি, তিনি আসিলে বলিয়া দিব।” “কাহাকে বলিয়া দিবি, কুমারকে ?” “র্তাহাকে কেন, ভগিনীপতিকে, ” “সেই ভয়ে ত আমি মরিয়া গেলাম।” “তোমার সঙ্গে পারিয়া উঠা দায়।” “অরুণ, মহাদেবী কোথায় ?” “ঙ্গামা-মন্দিরে ; নৰ্ত্তকীর কন্যার সঠিত মহারাজাধিরাজের বিবাহের কথা শুনিয়া অবধি তিনি শ্রাম-মন্দিরে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছেন, আর বাহির হন নাই।” “তিনি কি কাতারও সঙ্গিত সাক্ষাৎ করেন না ?” “না, তিনি কাহাকেও মুখ দেখান না।” “চল, তাহার নিকটে যাই।” “চল, দিদি তুমি চেষ্টা করিয়া দেখ, মহাদেবীকে যদি কিছু আহার করাইতে পার। মা আমার দুইদিন জলস্পর্শ করেন নাই। তুমি ত সমস্ত শুনিয়াছ ?” “পথে সমস্তই শুনিয়াছি। অরুণ, মহারাজের মতি-গতি এমন হইল কেন ?” “কি জানি দিদি, দুই মাসের মধ্যে পিতা অন্তঃপুরে আসেন নাই । পূৰ্ব্বে দিনান্তে একবার আমাকে না দেখিলে পিতা কাতর হইতেন, মাতার নিকটে অনুযোগ করিতেন ; এখন আমি প্রার্থনা করিয়া; তাহার সাক্ষাৎ পাই না । সৌরাষ্ট্রের যে ব্রাহ্মণ পিতার জীবনরক্ষা করিয়াছিল, তাহার পুত্র উপযুক্ত হইয়াছে। সেই ব্রাহ্মণ পুত্রের জন্ত পদপার্থী হইয়া নগরে আসিয়াছিল, আমি তাহার জন্য মহারাজের সহিত সাক্ষাৎ প্রার্থনা করিয়াছিলাম—কিন্তু পিতা—” অরুণার কণ্ঠ রুদ্ধ হইল, অশ্রুধারায় গণ্ডদ্বয় প্লাবিত হইল। জ্যেষ্ঠা কহিলেন “তুই বড় অভিমানিনী। পিতা কি বলিয়াছেন ?” রুদ্ধকণ্ঠে