পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৬১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উনবি শ অধ্যায় । Qዓፄ ১৭৫৭ খ্ৰীষ্টাবো কলিকাতার অবস্থা অতিশয় শোচনীয় হইয়া উঠে । যুদ্ধ-বিগ্ৰহাদি-সঞ্জাত বিপ্লবের পর, প্রায়ই মড়ক ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ১৭৫৭ খ্ৰীষ্টাব্দে কলিকাতায় ভীষণ মড়ক দেখা দিল । অনেক লোক জন মরিতে লাগিল। নবাবের আক্রমণে, কলিকাতার যে ক্ষতি হইয়াছিল, শমনের আক্রমণে তদপেক্ষণ অধিক ক্ষতি হইতে লাগিল । সহরময় একটা মহা হুলস্থল পড়িয়া গেল । ওয়াটসনের নৌ-বহরের “কোর্ট” জাহাজের চিকিৎসক আইভস সাহেব, এই মড়ক সম্বন্ধে অনেক কথা বলিয়া গিয়াছেন । আমরা এস্থলে তাহার উক্তির একাংশ উদ্ধত করিলাম। তিনি লিখিতেছেন-- “এই সময়ে কোম্পানীর হাসপাতাল, রোগীতে পরিপূর্ণ। ফেব্রুয়ারী হইতে ( ১৭৫৭ ) আগষ্ট পর্য্যস্ত এই সাত মাসের মধ্যে ১১৫০ জন রোগী ছাসপাতাল হইতে রোগমুক্ত হয় । ইহাদের সকলেই ইংরাজ। স্কর্ডি, পৈত্তিক-জ্বর, পিত্তশূল প্রভৃতি রোগেই অনেকে ভূগিতেছিল। ইহাদের মধ্যে জর-রোগীর সংখ্যাই সৰ্ব্বাপেক্ষা বেশী । এই সাত মাসের মধ্যে ৫২ জন লোকের হাসপাতালে মৃত্যু হয়। ৭ই আগষ্ট হইতে ৭ই নবেম্বর পর্য্যস্ত সময়ের মধ্যে, আরও ৭১৭ জন রোগী হাসপাতালে প্রবেশ করে। ইহাদেয় মধ্যে ১০১ জন মৃত্যুমুখে পতিত হয়। এই মৃতের দলের মধ্যে, পলাশীবিজয়ী এডমিরাল ওয়াটসনও ছিলেন। তিনিও জররোগে ইহলোক ত্যাগ করেন। ১৭৫৭ অব্দের আগষ্ট মাসে তাহার মৃত্যু হয়।* যে ওয়াটসন এত কাণ্ড করিয়া বঙ্গদেশে ইংরাজের যশঃগৌরব বিকীর্ণ করিলেন–র্তাহাকে অধিক দিন সে যশ সম্ভোগ করিতে হয় নাই । ৗ-যুদ্ধের পাচ বৎসর পরে, অর্থাৎ ১৭৬২ খৃঃ অকে, আর একবার যেখানে এগ্রিহটিকল চরাল সোসাইটর বাগান, অনেকে অনুমান করেন, সেইস্থানের উপর একটা প্রাসাদ-তুল্য অট্টালিক ছিল। ইহাই মীরজাফরের আবাস-বাটা। আবার অন্য ; মতে হরিণবাড়ী জেল যেস্থানে নিৰ্ম্মিত হইয়াছে—সেইস্থানে তাহার প্রাসাদ ছিল। আজ কাল যেস্থান অধিকার করিয়া জুলজিক্যাল-গডেন আছে, সেইস্থানে মীরজাফরের প্রণয়িনী' মণিবেগমের কলিকাতা বাসগৃহ ছিল। -

  • বর্তমান সেন্টজন চর্চ-ইয়াৰ্ডই সেকালের সমাধিভূমি ছিল। এই সমাধিভূমির

মধ্যেই ওয়াটসনের মৃতদেহু প্রোথিত হয়। আজিও একখানি প্রস্তর স্মৃতিফলক উপহার কাঞ্জিকাহিনী ঘোবণ করিতেছে। সেণ্টজন গির্জার পার্শ্বেই কোম্পানীর সাধারণ হাসপাতাল । ছিল। সমাধিক্ষেত্র ততদুর প্রশস্ত ছিল না। পরিশেষে এই সমাধিক্ষেত্র পরিবর্জন করিয়া ১৭৬৮ খৃঃ অব্দে পার্ক-ষ্ট্রটের নূতন সমাধিক্ষেত্রের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় । ইহা আজকাল Old Burial Ground বলিয়া বিখ্যাত। সেকালের অনেক গণ্যমান ইংরাজের সমাধি এইস্থানে আজও বর্তমান । ግ©