পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৭৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বাবিংশ অখ্যায় । ۹۰ و _ তখন আমাদের মধ্যে একটা বচসা আরম্ভ হইল। বচসার বিষয় এই, সদরদ্বারের কাছে চৌকী দিবে কে ? শেষ ঠিক হইল, আমি কোয়েল ও আর একটী লোক সদর-দরোজা চৌকী দিব। ইহার পর, দলের অন্তান্ত লোক বাটীর মধ্যে প্রবেশ করিল। এই সময়ে আমরা বাটীর ভিতরে একটা রোজা ভাঙ্গার শব্দ পাইলাম। তখনই মার্কস আসিয়া বলিল—কোয়েল রাস্তার ধারে দরোজায় চৌকী দিক। তুমিও ঐ পটুগীজ ভদ্রলোকট, ভিতরের যে দরোজা ভাঙ্গা হইয়াছে—সেইখানে চল । কিয়ৎক্ষণ পরে একজন লোক “বাৰু! বাৰু! দোহাই সাহেব !” বলিয়া চীৎকার করিতেছে শুনিতে পাইলাম । তারপরে স্ত্রীলোক ও ছেলেদের কান্নার শব্দও আমার কাণে আসিল। এই সময়ের মধ্যে মোহনপাল দুইবার বাটীর মধ্য হইতে বাহির হইয়া আসিয়া দেখিয়া গেল, বাহিরের চৌকী বন্দোবস্ত ঠিক আছে কিনা। দলের লোকের বেশী দেরী করিতেছে দেখিয়া, আমি বলিলাম—“তোমরা শীঘ্ৰ কাজ সারিয়া লও। বড় দেরী হইতেছে।” এই সময়ে মোছনপাল ও তাঙ্গর সঙ্গীরা ফিরিয়া আসিল । মোহন বলিল—“এইখানে কোথায় একটা মালগুদাম আছে। তাহার দরোজাটা ভাঙ্গিয়া একবার দেখা যাউক ।” রুসো, সাবল দিয়া সম্মুথের একটা ঘরের দরোজা ভাঙ্গিয়া ফেলিল। তাহার ভিতর হইতে কতকগুলি দামী কাপড় বাছাই করিয়া লইয়া, ম্যাথিয়াস তাহার ক্যাম্বিসের ব্যাগটা পূর্ণ করিল। তাহার পর সমস্ত দল বাটীর বাহিরে আসিয়া, তাহীদের হাতের বাতি নিভাইয়া ফেলিল। মোহনপাল ছাড়া, আমরা সকলেই রুসোর বাটীতে গেলাম । # রুসোর বাটতে ম্যাথিয়াস ব্যাগ খুলিয়া, লুষ্ঠিত কাপড় বখয়া করিতে আরম্ভ করিল। আমার সঙ্গীরা ও আমি আট পিস কাপড় ভাগে পাইলাম। সোনা রূপার জিনিসগুলি, মোহনপালকে দিয়া সেকরার কাছে বিক্রয় করাইবার জন্য পাঠান হইল । পরদিন প্রভাতে আমি পুনরার মার্কসের বাড়ী গেলাম। সেখানে ম্যাথিয়াস, বুয়াকস, মোহনপাল ও আর একজন বাঙ্গালীকে দেখিতে পাই। মার্কস বলিল-—“সোনারূপার জিনিস বিক্রয় করা হইয়া গিয়াছে। প্রত্যেকের ভাগে ছাব্বিশ টাকা বখরা পড়িয়াছে। সাক্ষী জারান জেরার মূথে একথাও স্বীকার করে “আমাদের দলে ইউরোপীয়ান, পটুগীজ, ইটালিয়ান, ও অন্তান্ত লোকও আছে। সকলকে জড় করিলে দুই শত লোক হয়। এই সমস্ত লোক জড় করিয়া আমরা একদিন “হিন্দুস্থান-ব্যাঙ্ক” লুঠ করিব মনে ভাবিয়াছিলাম।”