পাতা:কাব্যগ্রন্থ (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভাষা ও ছন্দ

কি কহিছে স্বর্গ জানে; অরণ্য উঠায়ে লক্ষশাখা
মর্ম্মরিছে মহামন্ত্র; ঝটিকা উড়ায়ে রুদ্র পাখা
গাহিছে গর্জ্জন গান; নক্ষত্রের অক্ষৌহিণী হ'তে
অরণ্যের পতঙ্গ অবধি, মিলাইছে এক স্রোতে
সঙ্গীতের তরঙ্গিণী বৈকুণ্ঠের শান্তিসিন্ধু পারে।
মানুষের ভাষাটুকু অর্থ দিয়ে বদ্ধ চারিধারে,
ঘুরে মানুষের চতুর্দ্দিকে। অবিরত রাত্রিদিন
মানবের প্রয়ােজনে প্রাণ তা'র হ'য়ে আসে ক্ষীণ।
পরিস্ফুট তত্ত্ব তার সীমা দেয় ভাবের চরণে;
ধূলি ছাড়ি একেবারে উর্দ্ধমুখে অনন্তগমনে
উড়িতে সে নাহি পারে সঙ্গীতের মতন স্বাধীন
মেলি দিয়া সপ্তসুর সপ্তপক্ষ অর্থভারহীন।
প্রভাতের শুভ্র ভাষা বাক্যহীন প্রত্যক্ষ কিরণ
জগতের মর্ম্মদ্বার মুহূর্ত্তেকে করি উদঘাটন
নির্ব্বারিত করি দেয় ত্রিলােকের গীতের ভাণ্ডার;
যামিনীর শান্তিবাণী ক্ষণমাত্রে অনন্ত সংসার
আচ্ছন্ন করিয়া ফেলে, বাক্যহীন পরম নিষেধ
বিশ্বকর্ম্ম-কোলাহল মন্ত্রবলে করি দিয়া ভেদ
নিমেষে নিবায়ে দেয় সর্ব্ব খেদ সকল প্রয়াস,
জীবলােক মাঝে আনে মরণের বিপুল আভাস;
নক্ষত্রের ধ্রুব ভাষা অনির্ব্বাণ অনলের কণা
জ্যোতিষ্কের সূচিপত্রে আপনার করিছে সূচনা

৪৪৫