পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গলার গীতিকবিতা УSve মুসলমানি ধারার পাশে যেমন রামপ্রসাদ উঠিয়া দাড়াইয়া বাঙ্গলার প্ৰাণের স্রোতকে অনাবিলভাবে বহাইয়া লইয়া গেছেন, ঠিক তেমনি রামমোহনের সময়ে কবিওয়ালার দল, রাম বসু, হরু ঠাকুর, নিতাই বৈরাগী, যজ্ঞেশ্বরী প্ৰভৃতি বাঙ্গলার খাটী কবির দল সেই সুরকে জাগাইয়া রাখিয়াছিল। এই কবিওয়ালাদের গানের যুগের কথা আমি আর একবার বলিতে চেষ্টা করিব । কবিওয়ালাদের শেষভাগে ঈশ্বর গুপ্তের যে হাস্যরস, তাহার কথাও কহিব । এই ফেরঙ্গ যুগের সঙ্গে বাঙ্গলার প্রাণের এক বিরোধ পরিস্ফটিভাবে দেখিতে পাওয়া যায়। যুগে যুগে সে একবার করিয়া সচকিত হইয়া নিজের মূৰ্ত্তিকে জাগাইয়া তোলে, মুসলমান যুগেও তাঁহাই করিয়াছিল আজ ফেরঙ্গ যুগেও তাহাই করিতেছে। একদিকে মুসলমান-ফেরঙ্গধারা আর অন্যদিকে বাঙ্গলার নিজের ধারা । কবে মাটী আবার সেই ধারার মূৰ্ত্তি পুরুষকে জনম দিৰে, তাহারই আশায় বসিয়া আছি। অন্ধকার আকাশ, আকাশে তারা নাই, দেশবাসী অসহ্য রূপে চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছে। বাহিরে তমসাচ্ছন্ন অবসাদ । একদিকে এই অরূপের বিশ্ব-মোহ, তাহার সে জ্ঞান নাই, তাহার ভবিষ্যৎ নাই, অতীত নাই-সব • গিয়াছে। সংসার জ্বালাময় ! সমাজ উচ্ছঙ্খল, কোথায় বাঙ্গলার আত্মা ! জাগরিত হও, বল-সমস্বরে এই মন্ত্র পাঠ কর, বল এইরূপ আমার, এই প্ৰাণ আমার। বল আমার অদৃষ্ট আমিই গড়িব । আমার জীবন আমিই গড়িব, আমার সাহিত্য আমিই রচনা করিব । গ্ৰহ-নক্ষত্রে জ্যোতিষ্কের দূরাগত পদধ্বনি কাণে আসিতেছে, বাঙ্গলা এ মিথ্যা রূপক ত্যাগ করিবেই করিবে। হে বাঙ্গলার সন্তান! মুখ তোল, সত্যকে-জীবনকে মুখোমুখি দেখ, ভাল করিয়া পরিচয় করিয়া লণ্ড, দেখ, ওই বিশ্বব্ৰহ্মাণ্ড ঘুরিতেছে, বিশ্বাস ও প্ৰেম বুকের ভিতর, ভবিষ্যৎ আমাদেরই। Vyr