পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R কাব্যের কথা -বন্ধনী, আধ্যাত্মিকতা জীবনের প্রাণ-প্ৰাণের অন্তরতম জ্বলন্ত পাবকশিখা। মানব-জীবন সেই শিখার জ্বলন্ত জাগ্ৰত মূৰ্ত্তি, ভাব ও ভাষা তাহার রঙ ও রঙের মিলন মাধুৰ্য্য। তাহার পর আর একটি কথা, তাহাকে বলে রূপান্তর। এই যে স্বাভাবিক মনের বিকাশ, তাহাকে ভাগবত সত্যে তুলিয়া ধরা। সেই রূপান্তরই বস্তু ও ভাবের সমন্বয়। বস্তুর অন্তরে যে রূপ, তাহার উৎসকে খুলিয়া দিয়া তাহাকে সেই রূপচিন্তামণির অচিন্ত্য-দ্বৈতাদ্বৈতের মধ্যে টানিয়া তোলাই কল্পকলার শেষ রঙ্গের খেলা। এই যে দেহ মন, এই যে ইন্দ্ৰিয়, তাহার অন্তরঙ্গ ভারের সহিত সাক্ষাৎ ও সহজ করিয়া দেওয়ার নামই রূপান্তর। এই রূপান্তর দেখাইতে পারিলেই ভোগের মধ্যে ত্যাগ আপনি ফুটিয়া উঠে। ত্যাগের মধ্যে আনন্দ আপনিই উছলিয়া উঠে । সকল জিনিষকেই এই অন্তরের দিক হইতে দেখিলেই এই রূপান্তরে পৌছান। সহজ হয়। শিল্পের সাধনা করিতে করিতে, রূপ হইতে রূপে বিলাস করিতে করিতে, জীবনে এমন এক মুহূৰ্ত্ত আসে, সেই অনন্তমুহূৰ্ত্তে এই রূপ-রাগভরা শব্দ-স্পর্শগন্ধময়ী পৃথিবীর রূপের মাঝে আসল রূপ ব্লালসিয়া উঠে, যাহাকে চাই, তঁহারই সাক্ষাৎকার হয়। সেই শুভমুহূৰ্ত্তের জন্যই সকল কল্পকলাবিদের সাধন। সেই শুভ-মুহূৰ্ত্তেই সকল সৃষ্টি সুন্দর, মধুর, কল্যাণ ও মঙ্গল হইয়া উঠে । সকল সৌন্দৰ্য্যের মধ্যে বিশ্বের আত্মা জাগ্ৰত ‘মুখরিত’ বিকশিত, সৈৗন্দৰ্য্যলীলায় লীলায়িত। প্রকৃতি ও মানব উভয়ের ভিতরই বিশ্বাত্মার সমান খেলা। সকল জীব, বৃক্ষ, লতা, পাতা, অণু, পরমাণু, সকলই প্ৰকৃতির মধ্যে । সাধনার পথে সাধক বিশ্বের দর্পণে তাহার নিজের মুখের ছায়া যখন দেখে, তখন তাহার সত্যরূপ প্ৰকটিত হয় । সে দেখে, তাহার সম্মুখে এক নূতন জগৎ,- সেই জগতের ও তাহার এক নাড়ী,-