বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪]
কুরু পাণ্ডব
৫৯

 কিন্তু দুঃশাসনকে কেহই নিবারণ করিতেছেন না দেখিয়া অভিমানিনী পাঞ্চালী পুনরায় বলিলেন—

 হায়! ভারতবংশীয়গণের ধর্ম্মে ধিক্। অদ্য বুঝিলাম ক্ষত্রচরিত্র নষ্ট হইয়াছে, যেহেতু সভাস্থ সকলে বিনা প্রতিবাদে কুলধর্ম্মের ব্যতিক্রম নিরীক্ষণ করিতেছেন।

 এই বলিয়া রোরুদ্যমানা কৃষ্ণা স্বীয় পতিগণের প্রতি কটাক্ষপাত করিলেন। রাজ্য ধন মান সম্ভ্রম সমস্ত যাওয়ায় তাঁহাদের যাহা না হইয়াছিল, দ্রৌপদীর এই সকরুণ কটাক্ষে তাঁহাদের মনে দুর্নিবার অন্তর্দাহ উপস্থিত হইল।

 কর্ণ পূর্ব্ব অপমান স্মরণ করিয়া অতীব হৃষ্ট হইলেন, শকুনিও দ্রৌপদীর অবমাননায় যোগদান করিলেন, দুঃশাসন দাসী! দাসী! বলিয়া উচ্চৈঃস্বরে হাস্য করিল।

 ভীমসেন প্রিয়তমার এ অবমাননায় উন্মত্ত প্রায় হইয়া বলিয়া উঠিলেন―

 হে যুধিষ্ঠির! দ্যূতপ্রিয় ব্যক্তিগণ গৃহস্থিত দাসীকে পণ রাখিয়াও কখনও ক্রীড়া করে না, তাহাদের প্রতিও কিঞ্চিৎ দয়া প্রকাশ করিয়া থাকে। দেখ, তুমি বহুকষ্টলব্ধ ধনসকল এবং তোমার অধীনস্থ আমাদিগকে একে একে পরবশে বিসর্জ্জন দিলে, আমি তাহাতেও ক্রোধ প্রকাশ করি নাই। কিন্তু তোমার এই শেষ কার্য্য যৎপরোনাপ্তি গর্হিত হইয়াছে। তোমারই অপরাধে ক্ষুদ্রাশয় কৌরবগণ এই অসহায় বালাকে ক্লেশ দিতে সাহসী হইল। তোমার দ্যূতাসক্ত হস্তদ্বয়