পাতা:গীতবিতান বার্ষিকী (মাঘ, ১৩৫০).pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫৪ গীতবিতান বার্ষিকী, ১৩৫০ ও Moonlight Sonata আমি অন্ততঃ হাজারবার শুনেছি। তাইথেকে আমার বিলিতী গানবাজনার উপর যে-অশ্ৰদ্ধা ছিল, তা কমে যায়। কৃষ্ণমগরের সত্যলাহিড়ী যখন কলকাতায় আসতেন, তিনি আমাদের বাসাতেই ৪/৫ দিন থাকতেন। ত’তে-আমাতে খুজতে-থু জতে বন্দ্রিমুকুলকে আবিষ্কার করলুম।

  • ামক্ষেত্ৰীনামক জনৈক হিন্দুস্থানী যুবকের বাসায় ; আর তাকে আমাদের বাড়ীতে নিয়ে

.এলুম। তিনি এসে তোরে একটি ভৈরবীর সুর বাজালেন ; সে-বাজনা গুনে আমার স্পষ্ট মনে আছে আমার চোখ দিয়ে ঝাবুঝর করে ’ অল পড়তে লাগল। বৌঠানও তার বাজনা গুনে মুগ্ধ হলেন । তারপর তিনি বৌঠানের একজন সঙ্গীতশিক্ষকহিসেবে নিযুক্ত হলেন, -সেতারের নয়, গানের। পরে শুনেছি, বৰ্জিতুকুল যোড়াসাঁকোয় আমার ভবিষ্যত স্বম্ভরপরিবারেও গান এবং সেতার কিছুদিন শিখিয়েছিলেন। এইসময় আমি তামক্ষেত্রীর কঁপায় বহু ওস্তাদের গানবাজনা শুনি। তারপর জ্ঞানদাপ্রসন্ন মুখুয্যে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে কলকাতায় বেকার বসেছিলেন । এবং গানবাজনার একটি আড়া নিজের বাড়ীতে বসিয়েছিলেন । সে-আড়ায় আমি তার সেতার ও মুরবাহার শুনতে প্রায়ই যেতুম। এবং সেখানে নগেন্দ্ৰ ভট্টচায-নামক একটি কখকের গান শুনতুম। তিনি হিন্দীগান খুব সুন্দর গাইতেন। এই হচ্ছে আমার সঙ্গীতপ্রিয়তার পূর্ব-ইতিহাস। তারপরেও এয, এ পাশ করবার। পর বিশ্বনাথ-নামক একটি হিন্দুস্থানী ওস্তাদের কাছে কিছুদিন গান শিথি । আমার যতদূর মনে পড়ে, তিনি আমাকে একটি কেদার ও একটি ইমন-কল্যাণ শেখান। কিন্তু সে-স্ট গানের একবর্ণও আমার মনে নেই। এরপর খৃঃ-এ ১৮৯৩ অামি বিলেত চলে ঘাই। তিনবৎসর পর ফিরে এসে যতদিন বিয়ে করিনি ততদিন নানা নাচগানের আসরে নিমজ্জিত হয়ে উপস্থিত থাকতুষ। ১৮৯৯ শালে । আমার বিবাহ হবার পর এসব অভ্যাস ছেড়ে দিলুম । এইখানে আমি বলতে চাই-যে, বিলেত থেকে ফিরে-আসবার পর আমি রবীন্দ্রনাথের নব-পৰ্য্যায়ের গানের রসগ্রহণ করতে সমর্থ হই। কারণ, বুঝতে পারি যে, সে-সব গানের সুর ক্লাসিকাল রাগরাগিণী ধেকেই উদ্ভূত। এবং তার ২৪টি গান আমি নিজেও গাইতে পারতুল,—মধা “আহা জাগি পোহালো বিশাবরী” ( ভৈ রো ), ও “তুমি যেয়োনা এখনি” ( ভৈরবী )। তারপর বর্ষামঙ্গলের কয়েকটি গান, যধ “বাদল মেঘে মাদল বাজে’, ‘তিমির অবগুণ্ঠনে, “যেতে। যেতে একলা পথে”—এগুলি আযার অত্যন্ত প্রিয় হয়ে ওঠে। এগুলি সবই গুরুগম্ভীর গান, যার সঙ্গে মৃদঙ্গের সঙ্গত করা চলে। আমি রবীন্দ্রনাথের বাউলের গানসম্বন্ধে কিছু বলুম না, কারণ সকলেই জানে, সেগুলি স্বদেশীযুগে। দেশের লোককে পাগল করে দিয়েছিল। এই সব অভিজ্ঞতার ফলেই আমি মধ্যেমধ্যে সঙ্গীতসম্বন্ধে কিছুকিঞ্চিৎ লিখি।